1. admin@mannanpresstv.com : admin :
চকবাজারে ‘বড় বাপের পোলা’তে নজর সবার - মান্নান প্রেস টিভি
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন

চকবাজারে ‘বড় বাপের পোলা’তে নজর সবার

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০২৪
  • ২০৭ Time View

পুরান ঢাকার চকবাজারে ইফতার ঘিরে নানান ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। শাহী মসজিদের সামনে ফিরে এসেছে চিরচেনা সেই রূপ। প্রতিবারের ন্যায় এবারও অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ‘বড় বাপের পোলায় খায়’। এই খাবারকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের কৌতূহল আর আগ্রহ যেমন বেশি, তেমনি বিক্রেতাদের হাঁক-ডাকও বেশি। তাল মিলিয়ে ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়’— এমন ছন্দ বলতে শোনা যায় অনেক দোকানিকে। আর এই খাবার কিনতে ক্রেতাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেকে এসেছেন দূরদূরান্ত থেকেও।

মূলত, ১৭০২ সালে ঢাকার দেওয়ান মুর্শিদ কুলি খাঁ চকবাজারকে আধুনিক বাজারে পরিণত করেন। আর এই বাজারের চকবাজারের শাহী মসজিদের সামনে একটি কূপ ছিল। তার চারপাশেই চেয়ার-টেবিল বিছিয়ে বিক্রি করা হতো ইফতারের বিভিন্ন উপকরণ। নাজির হোসেনের ‘কিংবদন্তির ঢাকা’ বইয়ে উল্লেখ রয়েছে, ১৮৫৭ সালের আগেই চকবাজার জমজমাট হয়। রোজার সময় মোগলাই খাবার এবং রকমারি ইফতার বিক্রি করা হতো এখানে।বিশ শতকের প্রথম দিকেও ঢাকায় ইফতারির বাজার বলতে শুধু চকবাজারকে বোঝাত। বিংশ শতকের শুরুর দিকেও এই ধারাবাহিকতা বজায় ছিল। তবে চল্লিশের দশকে পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। মহল্লায় মহল্লায় গড়ে উঠতে থাকে ইফতারির অস্থায়ী দোকান। এটা অবশ্য চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতেই হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ঢাকার মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইফতারের সঙ্গে যোগ হয় গ্রামবাংলার পিঠা-পুলি। এরপর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে রমজান ও ইফতারের আয়োজনেও বৈচিত্র্য বেড়ে যায় অনেক গুণ। এসব আয়োজনের মধ্যে বিশেষভাবে স্থান দখল করে আছে ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়’।

স্থানীয় দোকানিরা জানান, পুরান ঢাকাসহ গোটা রাজধানীতে একটি আকর্ষণীয় ইফতারির আইটেম হিসেবে এই খাবার অত্যন্ত পরিচিত। এটি তৈরিতে মাংস, সুতি কাবাব, মাংসের কিমা, ডাবলি, বুটের ডাল, ডিম, মগজ, আলু, ঘি, কাঁচা ও শুকনো মরিচসহ নানা পদের খাবার আইটেম এবং হরেক ধরনের মসলা প্রয়োজন হয়।

dhakapost

আব্বাস ফয়েজ নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ পুরান ঢাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী খাবার। ১৫ পদের খাবার আইটেমের সাথে ১৬ পদের মশলা মেশানো হয়। সবগুলো মিলে যে মিশ্রণ তৈরি হয়, সেটিই হচ্ছে এই খাবার। ডিম, গরুর মগজ, আলু, ঘি, কাঁচা ও শুকনো মরিচ, গরুর কলিজা, মুরগির মাংসের কুচি, মুরগির গিলা কলিজা, সুতি কাবাব, মাংসের কিমা, চিড়া, ডাবলি, বুটের ডাল ও মিষ্টি কুমড়া দেওয়া হয়। এগুলো আবার ভালোভাবে মাখিয়ে তারপর ঠোঙায় ভরে বিক্রি করা হয়। দোকান ও মানভেদে ৭০০-১২০০ টাকা কেজি দরে এই খাবার বিক্রি হচ্ছে।

dhakapost

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দোকানিরা ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিভিন্ন ছন্দ বলে হাঁক-ডাক দিচ্ছেন। ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙ্গা ভইরা লইয়া যায়’, ‘ধনী-গরিব সবাই খায়, মজা পাইয়া লইয়া যায়’, ‘মজার খাওন খাইয়া যান, প্যাকেট ভইরা লইয়া যান’, ‘আসল খাওন দেইখা যান, বাসার লাইগা নিয়া যান’সহ বিভিন্ন ছন্দ কাটতে দেখা যায়।

dhakapost

বাড্ডা থেকে এই খাবার কিনতে আসা মাহমুদুল্লাহ বলেন, বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা এই খাবারটি কিনতেই এসেছি। পাশাপাশি হালিমার বাদামের শরবত নিলাম। দামটা বেশি। তারপরও পরিবারের সবার সাথে বসে এসব খাবার দিয়ে ইফতার করতে অন্যরকম আনন্দ লাগে। তার জন্য নিয়ে নিলাম।

dhakapost

নিউমার্কেট থেকে ইফতার কিনতে আসা হাবিবুর রহমান বলেন, ছোট-বড় সব বয়সী রোজাদারের বড় বাপের পোলায় খায় প্রিয় খাবার। এখানে অবস্থাটা দেখুন। রীতিমতো কাড়াকাড়ি অবস্থা। রোজা শুরুর প্রথম দিকে হওয়ায় ভিড় বেশি। কয়েকদিন পরে কমে যাবে। ক্রেতা সাধারণের স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করে এসব খাবার তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের নৈতিকতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার জায়গায়ও স্পষ্ট হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন এই ক্রেতা।

dhakapost

এদিকে, ইফতার সামগ্রীর দোকানগুলোতে ফালুদা, ফিরনি, মাঠা, পেস্তা বাদামের শরবত, জিলাপি, ছোলা বুট, মুরগির রান, আস্ত মোরগ, মোগলাই পরোটা, মিষ্টি পরোটা, সমুচা, ডিম চপ, আলু চপ, হালিম, পেঁয়াজু, সবজি কাবাব, বেগুনি, বুটের ঘুগনি, দইবড়া, ভেজিটেবল রোল ও চিকেন টোস্টসহ নানান মিষ্টান্ন খাবারও বিক্রি হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Categories

© All rights reserved © 2022 mannanpresstv.com
Theme Customized BY WooHostBD