1. admin@mannanpresstv.com : admin :
খাল দখল করে প্রভাবশালীদের মার্কেট - মান্নান প্রেস টিভি
শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫৪ অপরাহ্ন

খাল দখল করে প্রভাবশালীদের মার্কেট

শাহাদাত হোসেন, মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা)
  • Update Time : রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৭০ Time View
 শাহাদাত হোসেন, মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা): কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার পেয়ারাতলী থেকে সাতঘরিয়া পর্যন্ত থাকা সরকারি খাল দখল করে মার্কেট নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাসহ স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। খালটি দ্রুত উদ্ধার করে এর পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখার দাবি স্থানীয়দের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পেয়ারাতলী গ্রাম থেকে সাতঘরিয়া পর্যন্ত খালটিতে কয়েক বছর আগেও পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক ছিল। খালে মাছ ধরার পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকরা এর পানি কাজে লাগাতেন তদের ফসলি জমিতেও।

এ ছাড়া অতিবৃষ্টিতে স্থানীয়দের ঘরবাড়িতে ওঠা পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমও ছিল সরকারি এই খালটি।স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে  উপজেলার বাইশগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল মালেক ও তার ছেলে ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল মমিন, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোক্তার হোসেন স্বপন, স্থানীয় যুবলীগ নেতা কোরবান আলী, যুবলীগ নেতা ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ফিরোজ আলম সোহাগ, আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক বাইশগাঁও ইউনিয়নের ২ নম্বর  ওয়ার্ডের সদস্য জাপর আহমেদসহ কয়েকজন প্রভাবশালী খালটি ভরাট করেন। পরে দখল করা জমিতে দোকানঘর নির্মাণ করেন। সবচেয়ে বেশি স্থাপনা নির্মাণ করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও তার ছেলে যুবলীগ নেতা আবদুল মমিন।

তাদের রয়েছে পাঁচটি দোকানঘর। তারা এ-সবই করেছেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলামকে ‘ম্যানেজ’  করে। ২০২৩ সালে প্রথমে তারা আওয়ামী লীগের কার্যালয় গড়ে তোলেন। পরে সেটি ভেঙে নির্মাণ করেন মার্কেট।
খাল দখল করায় স্থানীয় ফসলি জমিতে পানি পাওয়ার সুযোগ হারান কৃষকরা। এতে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হতে থাকে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, এই খালে পানি তাদের ফসলি জমিতে কাজে লেগেছে। বৃষ্টির সময় বাড়িঘরে ওঠা পানি সরে যেত এই খাল দিয়ে। কিন্তু প্রভাবশালী চক্রের কারণে খালটি এর অস্তিত্ব হারাতে বসেছে।

তারা একাধিকবার আপত্তি জানিয়েও লাভ হয়নি। ভূমি অফিসকে ‘ম্যানেজ’ করে খালে এখন মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। দখলদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে মুখ খোলেন না কেউ। একের পর এক দখলের কারণে  খালটি সংকুচিত হয়ে পড়েছে।দোকান ভাড়া নেওয়া বাবুল মিয়া বলেন, আমি আব্দুল মমিনের কাছ থেকে দুটি দোকানঘর ভাড়া নিয়েছি। প্রতিমাসে তিন হাজার ৫০০ টাকা ভাড়া দিই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দখলদার আবদুল মমিন বলেন, এটাতো নির্বাচনকালীন আওয়ামী লীগের কার্যালয়। এটা নির্বাচনের সময় থাকে এখানে। নির্বাচনকালীন আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়। এখানে দোকান যা, সবগুলো সরকারি খালের ওপর। আমরা আমির ভাই (সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম)-এর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে এগুলো করেছি। আমাদের মোট পাঁচটি দোকানঘর রয়েছে বাজারে।

তার পাশেই রয়েছে যুবলীগ নেতা কোরবান আলীর আরেকটি দোকান ঘর। যেখানে রয়েছে একটি ওয়ার্কশপ। যেটি ভাড়া নিয়েছেন জহিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। জহিরুল বলেন, আমি কোরবান আলী ভাইয়ের দোকানঘরে ভাড়া থাকি। প্রতিমাসে এক হাজার টাকা করে ভাড়া দিই।

অভিযুক্ত ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য দখলদার কোরবান আলী বলেন, আমার এখানে একটি ওয়ার্কশপ রয়েছে। প্রতিমাসে এক  হাজার টাকা ভাড়া পাই আমি। তার পাশেই আরেকটি দোকানঘর তুলে ভাড়া দিয়েছেন আন্দিরপাড় গ্রামের ফিরোজ আলম সোহাগ। তিনি বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত।

এ বিষয়ে ফিরোজ আলম সোহাগের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি তার দোকানের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এটি আমার এক ভাইয়ের। তবে ভাইয়ের নাম বলা যাবে না। যেখানে রয়েছে একটি গুদাম। সেটি ভাড়া নিয়েছেন বুরপৃষ্ঠ গ্রামের সজিব।

মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা সরকারি জায়গায় কোনো স্থাপনা থাকলে সেই বিষয়ে আমরা তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি  ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Categories

© All rights reserved © 2022 mannanpresstv.com
Theme Customized BY WooHostBD