1. admin@mannanpresstv.com : admin :
বিদ্যুৎ শক ও ঘণ্টার পর ঘণ্টা মারধর করতো - মান্নান প্রেস টিভি
শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৬ পূর্বাহ্ন

বিদ্যুৎ শক ও ঘণ্টার পর ঘণ্টা মারধর করতো

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : শনিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৪
  • ২২ Time View

আমাকে চিত করিয়ে শুইয়ে বলে তোর একহাত ছাত্রলীগ ভেঙেছে আরেক হাত আমরা ভেঙে দিবো। আমাকে নাভির নিচ থেকে হাঁটু পর্যন্ত মারধর করে। রুটি যেভাবে বেলে ঠিক সেভাবে আমার হাঁটু থেকে নাভি পর্যন্ত লাঠি দিয়ে চাপ দেয়। কান্না করলেই বলতো তোকে মেরেই ফেলবো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমাকে এভাবে মারতো। গতকাল শুক্রবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের বীভৎস মারধরের বর্ণনা দেন জবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক নূর নবী। পুলিশে নির্যাতনের শিকার নূর নবী বলেন, গত ১৯শে জুলাই আমরা শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে চেষ্টা করি। প্রধান ফটকের সামনে থাকা পুলিশ আমাকে বাধা দেয়। পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একর্পায়ে ডিবি পুলিশ আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট থেকে তুলে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়।

গাড়িতে উঠিয়েই আমাকে মারধর শুরু করে।  যখন আমাকে ডিবি অফিসে নেয়া হয় তখন আমি ভেবেছিলাম গাড়িতে যে টর্চার করা হয়েছে এর চেয়ে বেশি টর্চার আর হতে পারে না। আমাকে হয়তো এখন তারা ছেড়ে দিবে না হয় গ্রেপ্তার দেখাবে। কিন্তু এর চেয়ে যে পাশবিক নির্যাতন তারা করতে পারে তা আমার কল্পনায় ছিল না। আমাকে যখন ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায় তখন কালো কাপড় বেঁধে দেয়। নূর নবী বলেন, শুরুতে এক চেয়ারে বসিয়ে আমার শরীরের সব কাপড় চোপড় খুলে ফেলে। পুলিশ আমাকে মারছিল আর বারবার বলছিল তোর তথ্য আমরা অনেক দিন থেকে শুনেছি, ক্যাম্পাস থেকে কয়েকজন তোর কথা আগেই বলেছে। তুই জঙ্গি তুই শিবির। শেষ পর্যন্ত তারা আমাকে বলেছে তুই ছাত্রদল করিস। কারেন্ট শকের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ আমাকে প্রসাব করতে বলে। প্রসাব করার সময় আমাকে বিদ্যুৎ শক দেয়। হাতে একটা ইনজেকশন দেয়। ওরা আমার অন্ডোকোষে জোরে জোরে আঘাত করে। বার বার আমার মনে হচ্ছিল আমি মরে যাবো। নূর নবী বলেন, পুলিশ গত ১৫ই জুলাই থেকে আমার ফোন ট্রাক করছিল। অনেকের বাসায় ছাত্রলীগ কর্মীরা বন্দুক তাক করে। আমি আমার মায়ের থেকে ১৭ তারিখ বিদায় নিয়েছিলাম। মাকে বলেছিলাম, আমি মরে গেলে কেঁদো না। আর বেঁচে থাকলে বিকালে ফোন দেবো। এই ভয়েস রেকর্ডটা তারা শুনিয়ে শুনিয়ে মেরেছে। একপর্যায়ে ওরা আমার হাত-পা দুইদিক করে পারা দিয়ে ধরে। তারা আমার থেকে বিএনসিসি’র কার্ড পায়। তখন বলে, আমি এত শক্ত কেন? এ জঙ্গি, সে জঙ্গি ট্রেনিং নিয়েছে। আমি এটা বলতে পারিনি যে আমি সেনা মহড়ায় অংশ নিয়েছি, আমি অন্তত জঙ্গি হতে পারি না। আমাকে উলঙ্গ অবস্থায় রেখে দেয়। একটা সময়ে বিকালে ডিবি হারুন এসে বলে একে বাঁচিয়ে রাখছো কেন? একে ক্রসফায়ার দেও। আমার দুই হাতে হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে ভেঙে ফেলে। কিছুক্ষণ মারার পর অজ্ঞান হয়ে যেতাম, আবার মারতো। আমি ভেবেই নিয়েছিলাম আমাকে মেরেই ফেলবে।  নূর নবী বলেন, পুলিশ আমাকে বলে তোকে ক্রসফায়ার দিবো। তুই রেডি হয়ে নে। আমরা ৬ জন ছিলাম। রমনায় নিয়ে আমাদের চোখ খুলে দেয়া হলো। আমার হাতে পেট্রোল বোমা ধরায়ে দিলো। ভিডিও করা শুরু করলো। তারা যে এভাবে মামলা সাজাবে আমি ভাবতেও পারিনি। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মাসুস রানা, সোহান, স্বর্ণা আক্তার রিয়া, মোস্তাফিজুর রহমান, ফয়সাল, এ ছাড়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে নাইমা আক্তার রিতা, বিএম তানজীল, শাহিন আলম শান, স্বপনসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Categories

© All rights reserved © 2022 mannanpresstv.com
Theme Customized BY WooHostBD