নিখোঁজ হওয়ার এক মাস ছয় দিন পর গত ৬ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের কথিত টর্চার সেল ‘আয়নাঘর’ থেকে ফিরে এসেছেন ঢাকা কলেজ ছাত্রদল নেতা মো: আতিকুর রহমান রাসেল।
রাসেল শরীয়তপুর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মো: আবুল হোসেন সরদারের ছেলে। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা কলেজ শাখার ১ নম্বর সহসভাপতি ছিলেন।
উদ্ধারের পর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গত ১ জুলাই সন্ধ্যায় ঢাকার আজিমপুর সাপরা মসজিদের কাছ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর থেকে তার কোনো খোঁজ মিলছিল না।
তবে উদ্ধারের পর তিনি আয়নাঘরের নির্যাতনের ভয়াবহ বিবরণ দেন। বিবরণ দিতে দিতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি।
পর দিন ভোর ৫টার দিকে এক পথচারীর ফোন থেকে তার অবস্থান জানতে পেরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে তার স্বজনরা। এরপর অসুস্থ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে এখন তার শারিরীক অবস্থা অনেকটা স্বাভাবিক।
এদিকে, নিখোঁজ হওয়ার পর তার শোকে পরিবারের সদস্যরা পাগল প্রায় ছিল। দীর্ঘদিন তার সন্ধান না পেয়ে একবার ডিবি অফিস, একবার ডিএমপিতে, একবার র্যাব অফিসে, একবার ডিজিএফআইসহ ঢাকার বিভিন্ন থানায় খোঁজ করেও তার হদিস পাননি তারা। তিনি যে আটক বা গ্রেফতার হয়েছেন, তাই কেউ স্বীকার করেনি।
রাসেল নিখোঁজ হওয়ার পর তার বাবা স্থানীয় সপ্তপল্লী সমাচার পত্রিকার সম্পাদক মো: আবুল হোসেন সরদার গত ২ জুলাই ঢাকার লালবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর ৬ জুলাই লালবাগ জোনের পুলিশের ডিসির কাছে একটি আবেদনও করেন। মহাপুলিশ পরিদর্শক ও ডিএমপির পুলিশ কমিশনারকে ওই আবেদনের অনুলিপি দেয়া হয়েছিল।
এছাড়া মা হারা সন্তানকে ফিরে পেতে গত ১০ জুলাই উচ্চ আদালতে রিট করেন রাসেলের বাবা। আদালত ১১ জুলাই শুনানি শেষে রাসেলের বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে পুলিশের আইজিপিকে রুল জারি করেন। কিন্তু তাতেও কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এরপর ছাত্র জনতার প্রতিরোধের মুখে গত ৫ আগস্ট সরকার পতন হলে রাষ্ট্রপতি সব রাজবন্দীদের মুক্তি দেয়ার ঘোষণা দিলে তাকেও ছেড়ে দেয়া হয়।
সূত্র : ইউএনবি