আয়না ঘরের দশটি বসর
আমি শুধু তোমাকে ভেবেই বেঁচে ছিলাম!
বিশ্বাস করো
তোমার গভীর প্রেমটুকুই
আমাকে বাচিঁয়ে রেখেছে।
আয়না ঘরে প্রেমহীন মানুষ
যার হৃদয়ে প্রেম নেই বড়জোড় কয়েক মাস হয়তো বাঁচতে পারে,
তারপর দশফিট বাই দশফিট আলো বাতাস হীন ঘরে তারা দম বন্ধ হয়ে মরে যায়!
আমিও যখন মরছিলাম না, তখন ওরা আমাকে খুব নির্যাতন করতো যেনো আমি মরে যাই!
কিন্তু ওরা আমাকে খুঁজেইতো পেতো না!
ওরা যখন তুমুল নির্যাতন চালাতো আমি তখন তোমাকে নিয়ে ভরা জ্যোৎস্নায় দ্বিতীয়া তিথির রাতে একটি খোলা ডিঙি নায় ভেসে থাকতাম হাকালুকি হাওড়ের পানিতে, একদম মাঝরাতে,
অথবা আরশে আজিমের নিচে সিদরাতুলমুনতাহার পাদদেশে তুমি আমি গভীর অনুরাগে ধ্যানমগ্ন হয়ে থাকতাম! ওরা আমার মাটির দেহটাকে নির্যাতন করে-করে ক্লান্ত হয়ে যেত, সেখানে আমার অস্তিত্ব টের না পেয়ে মৃত ভেবে ফেলে যেতো বোকার দল।
কোনো কোনো দিন তোমার হাতে হাত রেখে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায় সারারাত বসে থাকতাম!
তুমি নিজ হাতে পৃথিবীর সমস্ত ঘড়ির কাটা গুলো আটকে দিতে আমার জীবন থেকে, নির্যাতন শেষে ওরা চলে গেলে আবার ঘড়ির কাটা চালু হতো!
তুমি বিশ্বাস করো,
একেই মনে হয় বলে প্রেমের খেলা! তুমি এ চিঠি পড়ে কখনোই কাঁদবে না,
আমাদের ভালোবাসা কতটা শক্তিশালী এটা মাপার জন্য এ পৃথিবীতে কোনো মিটার নেই!
কারণ তোমার হাতধরে আমি এমন সব স্থানে ভ্রমন করেছি যা পরকালের জন্য নির্ধারিত বলে মহাগ্রন্থে জেনেছি। সেখানে তোমাকে আমি সবুজ বরণের মনিমুক্তা খচিত বসনে দেখেছি, তুমি যে নিবিড় ভালোবাসায় আমার চোখে চোখ রেখেছো সে সুগভীর চোখ ইহজাগতিক কেনো রমণীর হতে পারে না।
ওরা চলে গেলে ক্লান্ত হয়ে,
ভালোবেসে মাটির দেহে যখন প্রাণ ফিরিয়ে দিতে,
আমি তখনো সে-সব বৃক্ষের সুশীতল ছায়া অনুভব করতাম,
শুনতে পেতাম স্বচ্ছ ঝর্ণা জলের কলকল ধ্বনি, তোমার স্ফটিক স্বচ্ছ হাতের পরশ তখনো আমার দেহমনে বিরাজমান প্রিয় তমা!
আয়না ঘরের দশটি বছর
এক ঐশী প্রেম আমাকে বাচিঁয়ে রেখেছে, তোমার অবয়বে তোমার আলিঙ্গনে!
আমার আজ মনে হয়,
এই পৃথিবীর কারো কাছে আমার কিছু চাওয়ার নেই!
আমি শুধু একটি আয়না ঘর চাই,
যেখানে প্রতি মূহুর্তে তুমি আমাকে জড়িয়ে আছো
তুমি, আমার প্রিয়তমা।
(১৩/০৮/২০২৪