বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত ২২ আগষ্ট থেকে সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা থাকলেও দলীয় কোন্দোলের কারণে গত দুইদিনে লাকসামে কোন কর্মসূচি পালন হয়নি।
লাকসামে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দোল তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে মারাত্মকভাবে। ফলে কোন আন্দোলন সংগ্রামে তাদেরকে কাছে পায়না উপজেলা নেতৃবৃন্দ। দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে মামলা হামলার শিকার হয়ে এখন অনেক নেতাকর্মী নিজেদেরকে দল থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী উপজেলা নেতাদের উপর থেকে আস্তা হারিয়ে ফেলেছেন অনেকটা। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে কোন কর্মসূচি দেয়া হলে উপজেলা নেতৃবৃন্দ মামলা হামলার ভয়ে ঘরে বসে থাকেন। কিন্তু এলাকায় বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়ে অসহায়ত্ব বোধ করেন দলের ত্যাগী কর্মীরা।
এই অসহায়ত্ত্বের খবর নেয়না কোন নেতা। এজন্যই অনেকে দল ত্যাগ করেছেন। এতে কেউ সুবিধা নিতে যোগ দিয়েছে সরকারি দলে। আবার কেউ রয়েছে নীরব নিস্কৃয়। তবে লাকসামে বিএনপি তিন ভাগে বিভক্ত থাকায় দলীয় কোন কর্মসূচি পালন হয়না।
এদিকে বিএনপি কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সাংসদ ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্ণেল (অব.) এম আনোয়ারুল আজীম, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক শিল্পপতি মো.আবুল কালাম এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক সাংবাদিক শফিকুর রহমান শফিক তিন জনই দলকে আলাদা আলাদাভাবে পরিচালনা করেন। তিন জনেরই দলীয় সমর্থক রয়েছে। তবে দলীয় সমর্থকের দিক থেকে বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক শিল্পপতি মো.আবুল কালামের সমর্থক রয়েছে বেশি।
একটি সূত্রে জানাযায়, শিল্পপতি মো.আবুল কালাম প্রতিনিয়ত তাঁর বাসভবনে দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে তাদেরকে নিয়ে আলোচনা সভা ও বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপর দিকে বিএনপি কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সাংসদ ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্ণেল (অব.) এম আনোয়ারুল আজীম করোনা আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন সময়ে অসুস্থ থাকার ফলে এলাকায় তেমন একটা আসা হয়না। তবে তাঁর বহু অনুসারী যোগ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক শিল্পপতি মো.আবুল কালামের গ্রুপে। আবার অনেকে দল ত্যাগ করে যোগ দিয়েছেন সরকারি দলে।
এছাড়াও দলের অপর গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক সাংবাদিক শফিকুর রহমান শফিক। এলাকায় তাঁরও একনিষ্ঠ কিছু কর্মী সমর্থক রয়েছে। আজকের জীবন ফাউন্ডেশন নামে তাঁর একটি ব্যক্তিগত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে। ওই সংগঠনের মাধ্যমে এলাকায় অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে তাঁর পরিচিতি রয়েছে ব্যপক। দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাঁর রয়েছে সুসম্পর্ক। তিনিও এলাকায় এসে নেতাকর্মীদের সঙ্গে সময় কাটান। এনিয়ে লাকসামে বিএনপি তিন ভাগে বিভক্ত রয়েছে। তবে ইদানিং তাদের অন্তকোন্দোল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যপকভাবে স্থান পেয়েছে। একে অপরকে ঘায়েল করতে কাঁদা ছোঁড়াছুড়িতে মেতে উঠেছে ফেসবুকে। নিজেরা নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোঁড়াছুড়ির ফলে সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যেই নিন্দার ঝড় উঠেছে। এতে থমকে গেছে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির বিক্ষোভ সমাবেশসহ বিভিন্ন আন্দোলন।