কুমিল্লার সাত কলেজ শিক্ষার্থী ১৫ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। গত ২৩ আগস্ট কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে তারা বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এরপর থেকে তাদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। যাওয়ার সময় তেমন টাকা-পয়সা, মোবাইল ফোন কিংবা পোশাক নেয়নি তারা। নিখোঁজ হওয়া প্রত্যেকেই পরস্পরের পরিচিত। তাদের সবার বয়সই ১৭ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। তারা কুমিল্লার বিভিন্ন কলেজে পড়ে। ইতিমধ্যে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় অভিভাবকরা জিডি করেছেন।
অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পড়াশোনার বাইরে অন্য কোনো বিষয়ের প্রতি কখনো তারা সন্তানদের আগ্রহ দেখেনি। কলেজ, কোচিংয়ের বাহিরে যে সময়টি পেত বাসায় বসে তা বই কিংবা মোবাইল ফোনে সময় কাটাতো। ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিজ নিজ সন্তানদের কোনো শত্রুও নেই বলে জানান অভিভাবকরা।
নিখোঁজ হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন-কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী ইমরান বিন রহমান (১৭), একই কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী সামি (১৮), কুমিল্লা সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী, হাসিবুল ইসলাম (১৮), একই কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিহাল (১৭), ভিক্টোরিয়া কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ইমতিয়াজ আহমেদ রিফাত (১৯), একই কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের আমিনুল ইসলাম আলামিন (২৩) ও ঢাকা ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে অনার্স সম্পন্ন করা নিলয় (২৫)।
কুমিল্লা নগরীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মুজিবুর রহমানের ছেলে ইমরান বিন রহমান। সে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী। মজিবুর রহমান তার ছেলের সম্পর্কে মঙ্গলবার বিকেলে এই প্রতিবেদককে জানান, ছেলে পড়াশোনা, কলেজ, কোচিং সেন্টার আর মসজিদ ছাড়া কোথাও যায় না। ২৩ আগস্ট দুপুরে আমাকে বলে, আব্বু, আমি আজ কোচিং থেকে রেলস্টেশন মসজিদে তাবলীগের বয়ান শুনতে যাব। ফিরতে দেরি হবে, আম্মুকে বলো না। ওইদিন রাতে বাসায় না ফেরার কারণে সারা রাত খোঁজাখুঁজি করি। পরদিন কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় জিডি করি। পরে র্যাব কুমিল্লাকে অবহিত করি।
কুমিল্লা সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিহালের বাবা সাইফুল ইসলামসহ নিখোঁজ হওয়া অন্যান্য অভিভাবকরাও প্রায় একই ধরনের কথা বলেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, আমরা কয়েকজন শিক্ষার্থী মিসিংয়ের জিডি হাতে পেয়েছি। ৫ সেপ্টেম্বর থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। তারা দলবদ্ধভাবে কোথাও গিয়েছে, নাকি অন্যকোনো বিষয়, তা তদন্তের পর বলতে পারবো।
এ বিষয়ে র্যাব ১১ সিপিসি ২ কুমিল্লার অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে চাচ্ছি না। আশা করি দ্রুতই আপনাদের অগ্রগতি জানাতে পারব।