শুরুর দিকে স্মার্টফোন যতটা ফাস্ট ছিল এখন ততটা নেই। এমন অভিযোগ বহু স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর। বিশেষ করে যারা মিডরেঞ্জ বা একটু কম দামি স্মার্টফোন ব্যবহার করেন তারা বছর পেরোলেই এ ধরনের সমস্যায় বেশি পড়েন। ফ্ল্যাগশিপ ফোনে এ ধরনের সমস্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। কম দামি বা মিডরেঞ্জের এসব ফোন ব্যবহারে তাই কিছু বিষয়ে কৌশলী হলে ভালো ও আরামদায়ক অভিজ্ঞতা পাবেন।
সিস্টেম আপডেট করুন
ব্যাটারির যত্নে মনোযোগ দিন
মোবাইল চার্জ দেওয়ার সময় ফোন চালাবেন না। এমনকি ফোন সব সময় ফুল চার্জ করা অথবা একেবারে চার্জ শেষ করা ঠিক না। ব্যাটারি উৎপাদনের সময় ঠিক কতবার ফুল চার্জ হওয়ার সক্ষমতা রাখে তা নির্ধারিত থাকে। ঘন ঘন ফুল চার্জ দিলে ব্যাটারির ক্ষতি হয়। সারা রাত ফোন চার্জে রাখবেন না। সচরাচর চার্জ ৯০ শতাংশ হলেই চার্জ থেকে খুলে নিন ও ২০ শতাংশে কমে এলে চার্জে দিন।
অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ সরান
মোবাইল রিসেট দেওয়ার পর কিংবা নতুন কেনার পর সবসময় কিছু অ্যাপ থাকে যা আপনার কাজে আসে না। এদের বলা হয়- ব্লোটওয়ার। মূলত স্মার্টফোন কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত আয়ের জন্য কিছু গেমস বা অতিরিক্ত অ্যাপ দিয়ে থাকে। কিছু কিছু অ্যাপ আন-ইনস্টল করা যায় আবার কিছু কিছু অ্যাপ আন-ইনস্টল করাই যায় না। যেগুলো আন-ইনস্টল করা যায়, সেগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলুন। এমনকি মোবাইলে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ রাখবেনই না।
সিস্টেম স্টোরেজ ফুল করবেন না
মোবাইলের সিস্টেম স্টোরেজ ব্যবহার করেন অনেকে। যে কারণে দেখা যায় দ্রুত সিস্টেম স্টোরেজ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় সিস্টেম স্টোরেজ কখনোই ৯০ শতাংশের বেশি ভরবেন না। বাজারে এসডি কার্ড পাওয়া যায় তা ব্যবহার করতে পারেন। ভালোমানের এসডি কার্ড ব্যবহার করুন। নকল বা সাধারণ এসডি কার্ড ব্যবহারে ফোন আরও সেøা করে দেয়।
অ্যাপ্লিকেশন ক্যাশ সাফ করুন
আপনার ফোনে ক্যাশ ফাইল জমে খেয়াল করবেন হয়তো। অনেকে নামটি শুনলেও কোথায় আছে জানেন না। মূলত ক্যাশ ফাইল হলো ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় ফোনে ব্রাউজার থেকে জমা হওয়া কিছু ফাইল। প্রায় প্রতিটি অ্যাপ বিশেষত গুগলের ইউটিউব, জি-মেইল, ফেসবুক ও ভারী গেমের অ্যাপ ক্যাশ জমা করে। এসব অ্যাপ্লিকেশন ক্যাশ ফাইল আপনার ফোনকে সেøা বানিয়ে দেয়। সিস্টেম স্টোরেজে গেলে সহজেই এ ক্যাশ ফাইল দূর করতে পারবেন। অনেকে অবশ্য অ্যাপের মাধ্যমেই এ কাজ করেন।
অ্যাপ্লিকেশনকে যত্রতত্র পারমিশন দেবেন না
ফোনে নতুন অ্যাপ ইনস্টল করার পরই নানা পারমিশন চেয়ে বসে। এতে আপনার প্রাইভেসি যেমন ঝুঁকির মধ্যে থাকে, তেমনই ব্যাটারির চার্জও কমে যায়। এ ছাড়া ফোন হয়ে যায় স্লো। কারণ সিস্টেম ডাটা এ পারমিশনগুলো সবসময় দেয় বলে অ্যাপগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু থাকে। সৌভাগ্যের কথা হলো-এন্ড্রয়েডের নতুন সংস্করণে আপনি যখন অ্যাপ ব্যবহার করবেন, তখনই পারমিশন কার্যকর হবে, এমন সেটিং চালু আছে। অ্যাপ ইনস্টল করে তাই ভেবেচিন্তে পারমিশন দিন।
অযথা ডাটা ও ওয়াইফাই চালু রাখবেন না
ফোনে সবসময় ডাটা বা ওয়াইফাই চালু রাখবেন না। যখন প্রয়োজন হবে তখনই এদের ব্যবহার করুন। এ ছাড়াও ব্যাকগ্রাউন্ড ডাটা নিষ্ক্রিয় রাখুন। তাতে ফোন স্লো হবে না।
বিজ্ঞাপন দেয় এমন অ্যাপ রাখবেন না
কম দামি ফোন কিংবা মিডরেঞ্জ অনেক কোম্পানির ফোনে বিজ্ঞাপনে অতিষ্ঠ হওয়ার জো। রুচি ও মানের দিক থেকে যেমন এ বিজ্ঞাপনগুলো নিম্নমানের তেমনি ফোন স্লো করার পেছনেও এদের হাত আছে। অবশ্য স্মার্টফোন কোম্পানির দেওয়া রমে বিজ্ঞাপন পুরোপুরি থামানো সম্ভব না হলেও অ্যাপের কিছু পারমিশন বন্ধ করে বিজ্ঞাপন থেকে কিছুটা রেহাই মিলবে। এ ছাড়াও এমন অ্যাপ ব্যবহার করবেন না যেগুলো প্রচুর বিজ্ঞাপন দেখায়। যদি ফোনের রমে সমস্যা থেকেই থাকে তাহলে কাস্টম রম বা স্টক এন্ড্রয়েড ব্যবহার করুন।
ফ্যাক্টরি ডাটা রিসেট
ফোনের অবস্থা যদি একদমই বাজে হয় তাহলে ফ্যাক্টরি ডাটা রিসেট ছাড়া উপায় নেই। এতে ফোন আবার প্রাথমিক অবস্থায় যেমন ছিল তেমন হয়ে যাবে। ফ্যাক্টরি রিসেট দেওয়ার পর আমাদের দেওয়া টিপসগুলো মেনে চললে আপনার ফোন নিয়ে বড় সমস্যায় পড়বেন না। স্মার্টফোন স্লো হওয়ার জন্য অনেকাংশে কোম্পানির সফটওয়্যার দায়ী হলেও আপনাকে কিছুটা সচেতন হয়েই চালাতে হবে।