ঢাকার আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ ভূঁইয়ার স্কুলপড়ুয়া (১৪) মেয়েকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা জেলা উত্তর শাখার সহ-সভাপতি শেখ শাহজালাল শাওন। গত ২৮শে অক্টোবর সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে। তবে বিষয়টি শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে জানাজানি হয়। পরে ওই মেয়ের মা ও ইউপি চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ ভুঁইয়ার স্ত্রী জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে ৩ জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, সাভার ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড স্কুল পড়ুয়া নবম শ্রেণীর ছাত্রী ১৪ বছরের নাবালিকা মেয়ে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ২৮শে অক্টোবর সকালে ছাত্রলীগ নেতা শেখ শাহজালাল শাওন তাকে জোর করে তুলে নিয়ে গেছেন। গত ২৮শে অক্টোবর সকালে বাসা থেকে রিকশাযোগে স্কুলে যাওয়ার পথে জামগড়া চৌরাস্তা সড়কে পৌঁছালে তার গতিরোধ করে সেখান থেকে অজ্ঞাত একটি প্রাইভেটকারে করে তুলে নিয়ে যায় শেখ শাহজালাল শাওন। দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীকে মুঠোফোনে উত্ত্যক্ত ও প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল শাওন। ভুক্তভোগীর মা জেসমিন আক্তার জানান, ‘আমার মেয়েকে মাঝে মধ্যেই বিরক্ত করতো শাওন। পরে বিষয়টি শাওনের মা শাহানাজ সুলতানা ও শাওনের বোন সুপানকে শাসন করতে বলা হলে তারা উল্টো ক্ষিপ্ত হয়। আমার ধারণা, প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমার মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে জানতে পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়ের কোনো সন্ধান পাইনি। বাধ্য হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়া চেয়ারম্যান বাড়ি সংলগ্ন গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, ছাত্রলীগ নেতা শেখ শাহজালাল শাওনের সঙ্গে ভুক্তভোগীর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। শাওন এক সময় চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ ভুঁইয়ার ড্রাইভার ছিল। শাওনের আর্থিক অবস্থা মেয়ের পরিবারের তুলনায় খারাপ হওয়ায় তার সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হয়নি। ৫ই আগস্টের পর আওয়ামী লীগ নেতা সুমন আহমেদ ভূঁইয়ার নামে একাধিক হত্যা মামলা হওয়ায় তিনি পলাতক রয়েছেন। এই সুযোগে প্রেমিক-প্রেমিকা পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। অভিযুক্ত শেখ শাহজালাল শাওন ঢাকা জেলা উত্তর শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও আশুলিয়া থানার বেরোন মানিকগঞ্জপাড়া মহল্লার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। শাওনের বিরুদ্ধেও আশুলিয়া থানায় ছাত্র-জনতা হত্যার একাধিক মামলা রয়েছে। অভিযুক্ত শেখ শাহজালাল শাওনের মোবাইলে বারবার ফোন দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে আশুলিয়া থানার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক মানবজমিনকে বলেন, ‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি তদন্ত রিপোর্ট দিলেই এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।