ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ১২ নং ভাবখালী ইউনিয়নের উনাইর পাড় খলিফাবাড়ী জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুহাম্মাদ রফিক আল ইসলামকে হঠাৎ করেই বিদায় দিয়েছে মসজিদ কমিটি। শনিবার মাগরিবের নামাজের পর এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে ওই মসজিদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ইমাম রফিক। স্থানীয় মুসল্লিদের দাবি, প্রায় ৯৬ শতাংশ মুসল্লী এখনও তাকেই তাদের ইমাম হিসেবে চান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি জুমার খুতবায় তিনি সমাজে ছড়িয়ে পড়া অনলাইন জুয়া, সুদ ও ঘুষের ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনা করলে মসজিদ কমিটির সভাপতি, ক্যাশিয়ার ও সেক্রেটারি ক্ষুব্ধ হন। অভিযোগ রয়েছে, সভাপতি নিজেই অনলাইনে জুয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং একাধিকবার পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। তার প্রভাবেই কমিটির পক্ষ থেকে ইমামকে বিদায় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
ফলে কোনো বৈধ কারণ ছাড়াই গত শনিবার রাতে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বিদায়ের ঘটনার ঠিক পরদিন (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত দেড়টার দিকে ইমাম রফিকের স্ত্রী সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন। বর্তমানে স্ত্রী ও নবজাতক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হঠাৎ করে আয়-রোজগার বন্ধ হওয়ায় পরিবারটি মানবেতর পরিস্থিতিতে পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে ইমাম রফিক বলেন, “আমি শুধু কুরআন-হাদিসের আলোকে সত্য কথা বলেছি। অথচ আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিদায় দেওয়া হলো। স্ত্রীর সিজারের সময় নবজাতক সন্তান নিয়ে এমন অন্যায় সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া আমার জীবনের জন্য বড় আঘাত।”
তিনি আলেম সমাজ, ইসলামপন্থী সাংবাদিক ও সাধারণ মুসলমানদের কাছে আহ্বান জানান, “আপনারা আমার পাশে দাঁড়ান, জালিম কমিটির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন। আমি শানে সাহাবা জাতীয় খতিব কাউন্সিল বাংলাদেশের সহায়তা কামনা করছি।”
মসজিদের সাধারণ মুসল্লীরা এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি,
“আমরা আমাদের ইমামকে চাই। তিনি সমাজে ইসলামি শিক্ষা প্রচারে আন্তরিক ছিলেন। সভাপতির ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় অন্যায়ভাবে বিদায় দেওয়া হয়েছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। মুসল্লীরা দ্রুত ইমাম রফিককে দায়িত্বে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন।