১) মন মন্ত্রণালয়
মুখচোরা, মনচোরা! তৃষ্ণার্ত কানাই!
ওরে আমার শ্যাম কালিয়া কৃষ্ণচূড়া!
সারা বন জুড়ে তোর একি আভা!
ঋতুর ক্ষরণে বিরাজমান রক্তিম স্বভাব!
করিসনে আর সূক্ষ্ম বিদ্রুপ বিরুপ অগ্নি লাভা!
সৃষ্টি হয় যে ক্ষত আত্মায় তোর প্রেমাভাব!
তুমি বললে তুমি কৃষ্ণচূড়া
আসলে রাধা বা কৃষ্ণচূড়ার
কোনো অবয়ব নই গো মোরা
তুমি মনচারী, প্রাণচারী,
হৃদয়রাজ্যে রোদ-বৃষ্টি ঝরা
জলাভাবে প্রাণ রাজ্যের প্রেমশস্য খরা॥
২) ভুবন সমাচার
দ্বি-ভুবন এ তারা সমান, আমি অসমান।
(সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ)
ত্রিভুবন আমরা সমান, জীবন সমতল সরল রেখা।
(সমবাহু ত্রিভুজ)
অসম ভুবন, আমরা তিনজনই অসমান, বিচিত্র প্রবাহ!
জীবন বক্র রেখা।
(অসমবাহু ত্রিভুজ)
বহু চিন্তার ভুবন, ওরা বিচ্ছিন্ন, সহজ, খুশি, সুখি ও ভিন্ন।
আমি নই ছিন্নভিন্ন তবে চিন্তিত ও সন্তানের তালে চলমান
আর গৌণ এবং ক্ষাণিকটা মৌন।
কিছুটা অবিচ্ছিন্ন।
(বহুভুজ)
৩) যুদ্ধবাজ
কবিতা তোকে বলে দিই-
আমি আর পারবো না যুদ্ধ করতে।
যদি যুদ্ধই একমাত্র অস্ত্র হয় তোকে পেতে!
তবে থেকে যাক সব কামান গোলা বারুদ এখানে, এই রাতে!
মনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ!
ইচ্ছা অনিচ্ছার বিরুদ্ধে যুদ্ধ!
অনুভূতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ!
চাওয়া পাওয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ!
ভালো লাগা, না লাগার বিরুদ্ধে যুদ্ধ!
কথার বিরুদ্ধে যুদ্ধ!
সুদানে অভ্যন্তরীন দুই সেনার মধ্যে যুদ্ধ!
ইসরাইল – ফিলিস্তিন দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধ!
ইউক্রেন- রাশা বছরের বেশি হয়ে গেল, যুদ্ধ।
যুদ্ধ যুদ্ধ আর যুদ্ধ!
আমি টায়ার্ড, খবরগুলো লাগছে ভীষণ উইয়ার্ড!
যুদ্ধ হোক ফায়ার্ড!
কবিতা আমাকে একটি সুস্থ জীবন দিবি?
আমি আর যুদ্ধবাজ হতে পারব না।
জীবন এতো ছোট! সময় এতো কম যে!
যুদ্ধ শুনলেই গা জ্বালা করে উঠে যেন!
কবিতা তুই আমার শান্ত শীতল শান্তি হয়ে যা, প্লিজ!
আমি আর যুদ্ধ করতে চাই না।
আমি আর ওদের মতো যুদ্ধবাজ হতে পারব না
৩) অলীক মায়া
সে টা ছিল বেস্ট অব দি বেস্ট টেষ্ট।
একটা কোমল সন্ধ্যার উজ্জল বাতি।
আমাকে ক্ষমা করে সে হয়েছিল বেস্ট ইন রেস্ট।
সু-মহান কোন ব্যক্তি। শান্তির সুসম ব্যাপ্তি।
গল্পটা এমন ছিল যে-
ইমোশনের করাল আঘাতে দগ্ধ হয়েছিলাম।
কবিতার ভাষাগত অর্থের স্বাদ বুঝে কুলক্ষণে
সব অনুভূতির তাল গোল পাকিয়ে ছিল।
মিশ্রণে অবোধ চেতনারও মৃত্যু ঘটেছিল।
স্ব-অধিকার বলে তাকে ছেড়ে
পালিয়ে বাঁচতে ছিটকে পড়েছিলাম কোথাও।
তাতে সে এমন বিস্মিত হয়েছিল যা
বোধকরি হয়নি আগে কখনও!
সে অষ্টম আশ্চর্যান্বিত হয়ে পাগল হয়ে খুঁজেছিল আমাকে সেবার।
কথার দড়ি টানাটানি শেষে আমাকে বলল সে এক পর্যায়ে,
“আর নাটক দেখতে পারব না, ক্ষমা করে দিলাম যাও”
শুনে কি যে ভালো লেগেছিল।
শ্রেষ্ঠ মধুর বাণী আমার পৃথিবীতে সেটা ছিল।
তক্ষুনি তার কাছে ফিরে গিয়ে মাপ চেয়েছিলাম।
বন্ধু রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলাম।
যদিও অন্যায্য কিছু করেছি বলে মনে হয়নি।
তবুও ক্ষমা চাইতেও যে এতো ভালো লাগে তা আগে কখনও বুঝিনি।চোখ ভিজেছিল সে রাতে।
সে কড়া বাণীতে সারাজীবনের দিব্যি দিয়ে বেঁধে রেখেছে আমাকে।
সেটিও এমন মধুর মনে হয়েছিল যে
মনে মনে আওড়ে নিয়েছিলাম গুরুকে নিঃশব্দে-
‘যে আমারে দেখিবারে পায়,
অসীম ক্ষমায়, ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি
এবার পূজায় তারি আপনারে দিতে চাই বলি’।
আজ অনেক কিছুই মনে পড়ছে বারবার আবার।
ভিজে উঠছে চক্ষুকোণদ্বয় সেই অচেনা অলীক মায়ায়॥