কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে জনৈক বড় ভাইকে তার ছোট ভাই সপরিবারে হত্যার হুমকি দেয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন ওই পরিবার। এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের পরও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নাঙ্গলকোট উপজেলার পৌচির গ্রামের মৃত হাজী সুলতান আহম্মদের ছেলে হাবিবুর রহমান দীর্ঘদিন যাবত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটে কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। চাকুরীর সুবাদে তিনি সপরিবারে চট্টগ্রামে থাকতেন। দীর্ঘদিন যাবত বাড়িতে না থাকায় সৎ ভাই দুলাল মিয়া বড় ভাই হাবিবুর রহমানের পৈতৃক সম্পত্তি ভোগদখল শুরু করেন। পরবর্তীতে চাকুরী থেকে অবসর নিয়ে হাবিবুর রহমান বাড়ি ফেরার পরও দুলাল মিয়া হাবিবুর রহমানের সম্পত্তির দখল ছাড়েননি। এ নিয়ে ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান বেশ কয়েকবার সমাজপতিদের দ্বারস্থ হলেও দুলাল মিয়া বরাবরই তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। সম্প্রতি বড় ভাই হাবিবুর রহমানের জায়গায় অবৈধ ভাবে ঘর তোলার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন ছোট ভাই দুলাল মিয়া। এতে বাধা প্রদান করায় হাবিবুর রহমানকে সপরিবারে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনার পর থেকে সপরিবারে নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে গত ২৬ আগস্ট ২০২২ ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান বাদি হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত সপরিবারে চট্টগ্রামে ছিলাম। এ সুবাদে আমার সৎ ভাই দুলাল আমার পৈতৃক সম্পত্তি ভোগদখল শুরু করে। বর্তমানে সে আমার জায়গায় জোরপূর্বক ঘর তোলার অপচেষ্টা করতেছে। আমি বাধা দেয়ায় সে আমাকে সপরিবারে হত্যার হুমকি দিয়েছে। এ বিষয়ে আমি নাঙ্গলকোট থানায় জিডি করতে গেলে দায়িত্বরত পুলিশ অফিসারের পরামর্শে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়েও এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
হাবিবুর রহমানের ছেলে মশিউর রহমান বলেন, অভিযুক্ত দুলাল মিয়া আমার বাবার সৎ ভাই। বাবার চাকুরীর সুবাদে আমরা সপরিবারে দীর্ঘদিন যাবত চট্টগ্রামে ছিলাম। এ সুযোগে আমার চাচা দুলাল মিয়া আমার বাবার পৈতৃক সম্পত্তি জোরপূর্বক ভোগদখল শুরু করেন। পরবর্তীতে আমরা বাড়ি ফেরার পর তিনি আমাদের সম্পত্তির দখল না ছেড়ে উল্টো আমাদেরকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি জোরপূর্বক আমাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করা ও বাড়ির জায়গা দখল করার অপচেষ্টা করতেছে বিধায় আমার বাবা বাধা দেয়ায় তিনি আমাদেরকে সপরিবারে হত্যা এবং প্রয়োজনে কোটি টাকা খরচ করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। এই কথার মোবাইলে রেকর্ডকৃত প্রমাণ আমাদের কাছে আছে এবং আরা তা পুলিশকে দিয়েছি। এ বিষয়ে আমার বাবা বাদি হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়েও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। উল্টো আমাদেরকে বলা হচ্ছে, আমরাই নাকি অভিযুক্ত দুলাল মিয়ার সম্পত্তি দখল করে আছি। তিনিও নাকি থানায় অভিযোগ করেছেন।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি নিজেদের ভুল বুঝাবুঝি দাবি করে অভিযুক্ত দুলাল মিয়া বলেন, ‘তিনি (হাবিবুর রহমান) আমাকে গালিগালাজ করায় আমি রাগের মাথায় হুমকি-ধমকি দিয়েছি।’