প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আর মানসিক অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে নিজ বসতঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় বালিশচাপায় শিশু কন্যা সন্তানকে হত্যা করেন মা। শুধু তাই নয়, হত্যার পর পানির কূপে ফেলে দেন।
নিহত শিশুটির নাম আয়েশা খাতুন (২)। তার মায়ের নাম আয়মন খাতুন ওরফে আম্বিয়া (৩০)। এই হত্যাকাণ্ডে সহযোগী ভূমিকায় তার বাবা বাদশা মিয়া (৩৫) ছিলেন বলে অভিযোগ।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার পূর্ব ঘিলাভূই গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়। তবে বুধবার নিজের অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মা।
হালুয়াঘাট থানার ওসি (তদন্ত) ইমরান আল হোসাইন বলেন, জমি-জমা নিয়ে বিরোধের জেরে ভাইদের ফাঁসাতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান মা। পরে নিজেও আত্মহত্যার প্রস্তুতি নেন। আত্মহত্যার কথা মনে করতেই অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ আর বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রোমহর্ষক তথ্য উঠে এসেছে।
এর আগে হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশু আয়েশার দাদি জুবেদা খাতুন বাদী হয়ে ছেলে বাদশা ও পুত্রবধূ আয়মন খাতুন ওরফে আম্বিয়াকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। বুধবার দুপুরে অভিযুক্তদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুজ্জামান খান।
বাদীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডে নিহত শিশুর মা আম্বিয়ার সাথে দুই ভাইয়ের জমি-জমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। তাদের ফাঁসাতে নিজ সন্তানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মা। পরিকল্পনা অনুযায়ী মঙ্গলবার আম্বিয়া তার দুই বছরের শিশুকন্যাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন। পরে প্রতিবেশী হালিমা খাতুনের পানির কূপে মরদেহ ফেলে আসেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী বাদশা মিয়া তাকে সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগপত্রে উলেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, ১৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার জুগলী ইউনিয়নের পূর্ব ঘিলাভূই এলাকার একটি পানির কূপ থেকে আয়েশা আক্তার (২) নামে এক শিশুর ভেসে থাকা মৃতদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ ও হালুয়াঘাট ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনীর সদস্যরা। শিশু আয়েশা আক্তার বাদশা মিয়া ও আম্বিয়া দম্পতির কন্যা ও একই এলাকার বাসিন্দা বলে জানা যায়।