1. admin@mannanpresstv.com : admin :
লেখক: আল মাহমুদ সৌরভ গল্প // তানুশা_আমার_মেয়ে - মান্নান প্রেস টিভি
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৬:১২ পূর্বাহ্ন

লেখক: আল মাহমুদ সৌরভ গল্প // তানুশা_আমার_মেয়ে

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : বুধবার, ১০ মে, ২০২৩
  • ১৩১ Time View
আপনার মেয়ে তানুশার জন্য তো একটা আম্মু দরকার! অন্তত তানুশার মুখের দিকে তাকিয়ে আমাকে বিয়ে করেন প্লিজ। আমাকে আপনার স্ত্রীর অধিকার দিতে হবেনা আমি শুধু তানুশার দেখা শুনা করবো আমাকে এই অধিকারটা দেন প্লিজ।
যা হবার নই তা কেনো বার বার এসে ডিসট্রাব করতে থাকেন। তানুশা ওর আপন মাকে ছাড়া আর কাওকে মা ডাকেনা। একদিন ওর স্কুলের মেম ওকে একবার শুধু বলছে তানুশা তোমার মা নেই তো কি হয়ছে? আমি তোমার মায়ের মত আমাকে তুমি মা বলে ডাকতে পারো। ঠিক তখনি স্কুলের ম্যাডামের হাতে কামড় দিয়ে রক্ত বের করে ফেলছে।
আমি কথা দিতেছি তানুশা আমাকে মা বলে ডাকবে!
যদি না ডাকে তখন কি করবেন?
বলছি তো ডাকবে আমার নিজের উপর বিশ্বাস আছে। তানুশা আমাকে মা বলে ডাকবে কথা দিলাম আপনাকে।
তানুশার জন্য হঠাত করে আপনার এত দরদ উতলে উঠলো কেনো? তানুশার কোনো মায়ের দরকার নেই! আমি ওর বাবা আমি ওর মা, আমি তানুশাকে সব স্নেহ মায়া মমতা দিয়ে বড় করবো। প্লিজ আপনি আর আমাকে এভাবে বিরক্ত করবেন না।
যদি তানুশার কিছু হয়ে যায় তাহলে ক্ষমা করতে পারবেন নিজেকে? ছোট বাচ্চা মেয়েকে আপনি কি করে ওকে লালন পালন করবেন? প্লিজ আমাকে বিয়ে করেন আমি শুধু তানুশার দেখা শুনা করবো।
আমার মেয়েকে নিয়ে আপনাকে চিন্তা না করলে হবে? আর যদি শুধু মাত্র দেখা শুনা করতে চান তাহলে আমাকে বিয়ে করতে হবে কেনো? আপনি চাইলে আমাদের অফিসের চাকরিটা ছেড়ে তানুশাকে দেখা শুনা করার চাকরিটা নিতে পারেন!
চাকরি নিলে তো তানুশা আমাকে মা বলে ডাকবেনা! আর তাছাড়া আপনি যে কোনো সময় আমাকে চাকরি থেকে বিদায় করে দিবেন।
বুঝতে পারছি আপনি কি চান দেখুন যা হবার নয় তা কোনো দিন হবেনা! আজকের পর আপনাকে যেনো আমাদের বাড়ির আশে পাশে না দেখি। মুখের উপর দরজাটা লাগিয়ে দিয়েছি। তখনি আম্মা এসেছে!
আম্মা:- সৌরভ মেয়েটা কে?
আমি:- (আম্মাকে বলা যাবেনা এই মেয়ে আমাকে বিয়ে করতে চায় তাহলে আম্মা আবার ওকে ভিতরে নিয়ে আসবে) জানিনা কিন্তু মনে হয় মাথার সব স্কুরু ডিলা ঢালা হয়ে গেছে।
আম্মা:- মাথার স্কুরু ডিলা বুঝলাম কিন্তু তোর কাছে কেনো এসেছে? তখন কলিং বেলের শব্দ শুনতে পেলাম। আম্মা দরজার দিকে গেছে আমি সিঁড়ি দিকে হাটা দিয়েছি! তখনি মা আমাকে ডাক দিয়ে বলে! সৌরভ লয়ার সাহেব এসেছে! আমি লয়ার সাহেবের কাছে গেলাম।
আমি:- হ্যা মিষ্টার রাব্বি বলেন কেনো এসেছেন?
রাব্বি:- মিষ্টার সৌরভ আপনার স্ত্রী রিপা তানুশাকে নেওয়ার জন্য কোর্টে মামলা করছে! এই সেই কোর্টের চিঠি আগামী মাসের ১০ তারিখে কোর্টে তানুশাকে নিয়ে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আমি:- দেন চিঠিটা পড়ে বলি! কিন্তু রিপার সাথে তো আমার লিগাল ডির্ভোস হয়ে গেছে! আর রিপা তো বিয়ে করেছে তাহলে সে এখন তানুশাকে নিতে চাচ্ছে কেনো?
রাব্বি:- হয় তো আপনাকে আরো কষ্ট দিতে চাই! আপনার হাতে মাত্র ২৮দিন সময় আছে! এই ২৮দিনের মধ্যে তানুশার মায়ের ভূমিকা পালন করার মত একটা মেয়ে লাগবে!
আমি:- মায়ের ভূমিকা পালন করার জন্য মেয়ে লাগবে কেনো?
রাব্বি:- কারণ কোর্টে তানুশার মা হিসাবে একজনকে লাগবে।
আমি:- ঠিক আছে আপনি যান! রাব্বি চলে গেছে আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে আছে! তানুশা এসেছে আমি তানুশার দিকে তাকিয়ে আছি! আমার বেচে থাকার এক মাত্র সম্ভল আমার মেয়ে আমি ওকে হারাতে পারবোনা!
তানুশা:- বাবাই চলো আমাকে স্কুলে নিয়ে যাবে!
আমি:- হ্যা আসছি! আমি চোখের পানিটা মুছে তানুশাকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছি! হঠাত করেই রুপার কথা মনে হলো! তানুশাকে স্কুলে দিয়ে অফিসে গেলাম। গিয়ে দেখি রুপা বসে আছে আমি ওকে বলেছি আমার কেবিনে আসতে!
রুপা- আসবো স্যার?
আমি:- হ্যা এসো! সকালে রোজ আমাদের বাড়িতে গিয়ে ঝামেলা করো কেনো? এই নাও চিঠি!
রুপা:- কিসের চিঠি?
আমি:- তোমাকে চাকরি থেকে বরখাস্থ করা হলো!
রুপা:- কিন্তু কেনো? স্যার প্লিজ এমনটা করবেন না আমার ছোট ভাই বোন অসুস্থ মা ঘরে! চাকরিটা চলে গেলে আমাদের বেচে থাকতে কষ্ট হবে!
আমি:- যদি চাকরি করো তাহলে এক সাথে দুইটা কাজ করবে কি করে? তানুশার মায়ের অধিকার তোমাকে দিবো কিন্তু তোমার সাথে আমার একটা চুক্তি থাকবে সেই চুক্তি মেনে আমাকে বিয়ে করতে রাজি আছো তুমি?
রুপা:- সব চুক্তিতে রাজি কিন্তু আমার একটা কথা রাখতে হবে শুধু আমার মায়ের অপারেশন আর ছোট বোনের বিয়ের খরচের টাকা আপনাকে দিতে হবে!
আমি:- সব করতে রাজি কিন্তু তানুশা তোমাকে মা বলে ডাকতে হবে! আর তার সময় মাত্র এক মাসের মধ্যে! যদি তানুশা ওর আপন মায়ের যায়গা তোমাকে বসাতে পারে তাহলে আমি এই কাজ গুলি করবো!
রুপা:- আমি রাজি আছি!
আমি:- ঠিক আছে তাহলে এই কাগজ গুলিতে সাইন করে দাও!
রুপা:- কিসের কাগজ!
আমি:- চুক্তির কাগজ! যদি তোমাকে এক মাসের মধ্যে তানুশা মা হিসাবে গ্রহন না করে তাহলে তুমি না চাইলেও আমাদের ডির্ভোস হয়ে যাবে! যদি এক মাসের মধ্যে তানুশা তোমাকে মা হিসাবে গ্রহন করে এর পর তুমি কোনো দিন নিজে সন্তান নিতে পারবেনা। তারপর হলো তানুশা তোমাকে মা হিসাবে গ্রহন না করে তাহলে তোমার মা আর তোমার বোনের জন্য কোনো রকম খরচ আমি বহন করবোনা! রুপা কিছুটা থমকে গেছে চিন্তা করছে! কি নিজের বিশ্বাস কোথায় গেলো?
রুপা:- আমার বিশ্বাস আছে! দেন কাগজ আমি সাইন করে দিচ্ছি! রুপা সাইন করে দিয়েছে!
আমি:- ঠিক আছে তুমি এখন কাজ করো সন্ধায় তোমাকে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করবো কাজি অফিসে! রুপা আমার দিকে তাকিয়ে আছে! কিছু বলবে?
রুপা:- আজকেই বিয়ে?
আমি:- হ্যা কোনো সমস্যা হবে?
রুপা:- বিয়ে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন আছে! গায়ের হলুদ বন্ধুরা আসবে বাড়িতে অনেক মেহমান আসবে এসবের পর আমার বর আমাকে গিয়ে আনবে!
আমি:- এত সময় আমার কাছে নেই! তুমি যাও আর শুনো অফিসে কাওকে কিছু বলার দরকার নেই! কথাটা যেনো মনে থাকে যদিও তোমার মধ্যে কোনো কিছু লুকানো থাকেনা! রুপা চলে গেছে আমি কাজ করছি দুপুরে গিয়ে তানুশাকে বাড়িতে দিয়ে এসেছি! রুপা কেমন একটা চিন্তায় আছে কাছে গিয়েই বলি রুপা চলো?
রুপা:- কোথায়?
আমি:- কাজি অফিসে! রুপা আমার দিকে তাকিয়ে আছে! কি হলো চলো!
রুপা:- হ্যা চলেন! দুজনে বেড়িয়ে এসেছি! গাড়িতে করে রুপাকে নিয়ে কাজি অফিসে এসেছি! আমার দোস্ত জুয়েল আর রবিনকে আগেই ফোন করে বলে দিয়েছি! মিষ্টার রাব্বিকে বলছি কাজি অফিসে এসে থাকার জন্য। আমরা পৌঁছালাম কাজি অফিসের সামনে!
আমি:- রুপা নাও এখানে কিছু গহনা আর নতুন কাপড় আছে এই গুলি পড়ে নাও! রুপা আমার দিকে তাকিয়ে আছে! তাকিয়ে থাকলে তো চলবেনা যাও এখন! রুপা গিয়ে ফ্রেশ হচ্ছে এর মধ্যে কাজি সাহেব লিখা লিখির কাজ শুরু করেছে! রুপা কাপড় পড়ে বউ সেজে এসেছে বাহ অনেক সুন্দর লাগছে রুপাকে!
জুয়েল:- কাজি সাহেব বর কনে দুজনে এসেছে কোথায় সাইন করতে হবে বলেন!
কাজি:- কনের পরিচয় আগে দেন! রুপা তার সব পরিচয় দিয়েছে! নেন এখানে সাইন করে দেন! আমি আর রুপা দুজনে সাইন করে দিয়েছি! বিয়েটা সম্পর্ন হয়েছে!
আমি:- ঠিক আছে তাহলে গেলাম! রুপাকে নিয়ে গাড়িতে উঠেছি! রুপা আমার দিকে তাকিয়ে আছে! রুপাকে নিয়ে রুপাদের ভাড়া বাড়িতে গেলাম!
রুপা:- এখানে আসলেন কেনো?
আমি:- তোমার মা আর ছোট ভাই বোনকে নিয়ে এসো!
রুপা:- কিন্তু কেনো?
আমি:- দরকার আছে! রুপা গেছে আমি গাড়িতে বসে আছি প্রায় ঘন্টা খানেক পড়ে রুপা ওদের সবাইকে নিয়ে এসেছে! গাড়িতে বসতে বলো ওদের সবাইকে! রুপা ওর মা আর ভাই বোনদের গাড়িতে বসিয়েছে! আমি গাড়িটা চালাচ্ছি! কিছুক্ষণ পর রুপা বলে!
রুপা:- কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?
আমি:- নামো সবাইকে নিয়ে!
রুপা:- এখানে নামবো কেনো?
আমি:- কথা কম বলে নামো! আমি নিজেই নেমে গেলাম! রুপা ওর মা ভাই বোনকে নিয়ে নেমেছে! তখনি রিফাত এসেছে!
স্যার সব কিছুর ব্যবস্থা হয়ে গেছে! নেন চাবিটা!
আমি:- ঠিক আছে যাও! রুপার পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটা ফ্লাটে গেলাম! রুপা আজ থেকে তোমার মা বোন ভাই এনারা এই ফ্লাটে থাকবে! রুপার মায়ের সাথে রুপা কথা বলছে! রুপার মা বিয়েটা মেনে নিতে পারছে না! কিন্তু রুপা অনেক বুঝিয়ে বলছে পড়ে অনুষ্টান করে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে। ওদের তর্ক বিতর্ক হচ্ছে আমি বাহিরে চলে এসেছি! কিছুক্ষণ পর রুপা এসেছে মন খারাপ করে! রুপা এবার চলো আমি রুপাকে নিয়ে গাড়িতে করে বাড়িতে এসেছি! বাড়িতে ঢুকতেই মা বলে!
মা:- সৌরভ মেয়েটি কে?
আমি:- রুপা আমার বউ আজ থেকে রুপা এই বাড়িতে থাকবে! এক এক করে বাড়ির সবাই চলে এসেছে! আপু ভাবি ভাইয়া আর দুলাভাই। বাবা মনে হয় এখনো আসেনি বাড়িতে।
মা:- বিয়ে কবে করেছিস?
আমি:- আজকেই! রুপা মাকে গিয়ে সালাম করে নাও! রুপা গিয়ে মাকে সালাম করেছে।
আপু:- মেয়েটির পরিচয় কি?
আমি:- এত কিছু জানি না বাছ আজ থেকে রুপা এই বাড়িতে থাকবে। ওর নাম রুপা আমার স্ত্রী আর কিছু জানার দরকার নেই! রুপা ও আমার আপু ওর পাশে দাঁড়িয়ে আছে আপুর হাজবেন্ট! আর এরা ভাইয়া ভাবি! এখন চলো আমার সাথে বলে রুপার হাত ধরে রুপাকে উপরে নিয়ে গেলাম আমার রুমে!
রুপা:- একটা কথা বলার ছিলো!
আমি:- থাক বলতে হবেনা! তোমাকে এই বাড়িতে যেই কারণে আনা হয়ছে সেই কাজটা ঠিক ঠাক মত করবে! তানুশাকে সব স্নেহ মায়া মমতা দিয়ে মায়ের যায়গাটা দখল করবে! এই ঘরটা আমার কোনো কিছু পরিবর্তন করার চেষ্টা করবেনা! আমি ফ্রেশ হতে যাচ্ছি!
রুপা:- যেইদিন অধিকার পাবো সেইদিন নিজের মত করে সাজাবো! আমি কিছু বলিনি ওয়াশ রুমে চলে গেছি! ওয়াশ রুম থেকে এসে দেখি রুপার হাতে তানুশা কামড় দিয়ে ধরে রাখছে আর রুপা চিৎকার দিচ্ছে জোরে জোরে কিন্তু তানুশা কামড় ছাড়ছে না।
আমি:- তানুশা কি করছো? আমি তানুশাকে ছাড়িয়ে নিয়েছি! রুপার হাতে দাত গুলি ডেবে গেছে কিছুটা রক্ত বের হচ্ছে। রুপা তো কান্না ভেজা চোখে তানুশার দিকে তাকিয়ে আছে!
তানুশা:- এরপর যদি আর কোনো দিন বলো তুমি আমার মা তাহলে ঐ সুন্দর গালে জোরে কামড় দিবো যাতে করে তোমাকে বিশ্রি দেখায়! আর কেউ তোমাকে তখন পছন্দ করবে না! তানুশা আমার কোলে উপর থেকে নেমে চলে গেছে রুপার দিকে তাকিয়ে আছি!
আমি:- তোমার বিশ্বাস মনে হয় কিছুটা কমছে তাইনা মিস রুপা?
রুপা:- তানুশা আমাকে মা হিসাবে মেনে নিবে আর আমি আপনাকে কেনো বিয়ে করেছি সেইটার কারণ জানতে চাইলেন না মিষ্টার সৌরভ।
আমি:- বিয়ে করেছো তোমার মায়ের অপারেশন আর বোনের বিয়ের খরচের জন্য!
রুপা:- নাহ আসল কারণটা তাহলে শুনেন! যখনি রুপা কথাটা বলছে আমি রুপার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি আর রুপা ডলে নিচের দিকে পড়ে যাচ্ছে!

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Categories

© All rights reserved © 2022 mannanpresstv.com
Theme Customized BY WooHostBD