রাত তখন ১২ টা — মাতোলি পতিতালয়ের সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছে তোহা ! হঠাৎ পিছন থেকে চলন্ত বাইক থামলো তোহার গা ঘেষে । ভারি কন্ঠে অচেনা লোকটি বলে উঠলো —
“এক রাতের জন্য কতো করে নেও ??
তোহা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখলো লোকটির মুখের দিকে । লোকটির চেহারাটা দেখা যাচ্ছে না হেলমেট পরার কারনে । তোহা চোখ ফিরিয়ে কিছু না বলেই দ্রুতো হাটা শুরু করলে । লোকটি হেলমেট খুলে আবারও বলে উঠে —
“এক রাতের রেড কতো সুন্দরী ??
তোহার উন্না দিয়ে মুখ ডাকা । না দেখেই সুন্দরী বলা, তার উপর আবার কু-প্রস্তার দেওয়া বদমাইশ কোথাকার । তোহার রাগে চোখ লাল হয়ে গেলো । পিছন ফিরে লোকটার দিকে তাকাতেই তোহা চমকে উঠলো ।
তোহা দেখলো লোকটি আর কেও না তার হবু স্বামী অরণ্য । তোহা অরণ্যকে দেখো দুচোখকে যেনো বিশ্বাসই করতে পারছে না । তোহার পুরো শরীর ঠান্ডা হয়ে গেলো অরণ্যকে দেখে । সে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না । কালকের সেই ছবির লোকটা আজ তার সামনে । খুব সুদর্শন একটা যুবক । যেমন উচ্চতা তেমনই শরীরের গঠন । আর কালো শার্ট পেন্টে রাতের নিল আমাকের নিচে ধোয়া ধোয়া অন্ধকার যেনো ফুটো উঠেছে তার সুন্দর্য ।
তোহা অবাক দৃষ্টিতে দেখছে অরণ্যকে । এ যেনো একটা রোমান্টিকতার ছোয়া ।
কালকেই, আশরাফ, তোহার বাবা তাকে অরণ্য এর ছবি দেখিয়েছিলো । বাবার ছোটবেলার বন্ধুর ছেলে বাবার মুখে অরণ্যর কথা অনেক শুনেছি । কিন্তু আজ যেনো নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না । বাবা বলেছিলো অনেক ভালো ছেলে । আচার-আচারন, কথা-বার্তা সবকিছুই ভালো । এমন কি বিদেশ থেকে পড়াশোনা করে এসেছে । পড়াশোনা শেষ করেছে চাকরি-বাকরি, ব্যাবসা-বানিজ্য করবে । বাবা বলেছিলো আনোয়ার চৌধুরীর অরণ্যর বাবার সাথে পাকা কথা হয়েছে অরণ্য চাকরি পেলে বিয়ের কাজটা সেরে ফেলবে । অরণ্য এসব বিষয়ে তেমন কিছুই জানে না ।
তোহার মনে হাজারও প্রশ্ন জাগছে । কাল সারারাত অরন্যর ছবিটা নিয়ে কতো কিছুই না ভেবেছে সে । সারারাত ছবিটা দেখেছে আর কল্পনা করেছে ।
তার ভাবনা চিন্তা কি তাহলে সবই ভুল । অরণ্যর ভালো মানুষের পিছনের যে খারাপ মানুষ আছে এটা কেও জানে না ।
অরণ্য তোহাকে অবাক হয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখে বাইকের হর্ন বাজালো । হর্ন বাজানোর শব্দে তোহার হুস ফিরলো । তোহা কোনো কথা না বলেই সোজা অরণ্যর গালে একটা চড় বসিয়ে দিলো । ঠসসসসসসস
অরণ্য বোকার মতো গালে হাত দিয়ে বাইকে বসে আছে । অরণ্য কিছুই বুঝতে পারলো না কি হচ্ছে ।
তোহা উচ্চ কন্ঠে বলে উঠলো — “এটাই আপনার আসল চেহারা অরণ্য চৌধুরী ।
অরণ্য চোখ বড় বড় করে তাকালো তোহার দিকে ।
গাল থেকে হাত নামিয়ে — ” এই মেয়ে তুমি আমার নাম জানলে কিভাবে ?? কে তুমি ?
“আমি যেই হই আপনার জেনে লাভ নেই । আমাকে দেখে কি পতিতা লয়ের মেয়ে মনে হয় আপনার ? আপনার সাহস হলো কি করে আমাকে বাজে প্রস্তাব দেওয়ার ?
অরণ্য কিছুটা ঘাবড়ে গেলো তোহার কথা শুনে । এজন্য ঘাবড়ালো, মেয়েটা হয়তো আমাকে চেনে ।
অরণ্য নরম শুরে বললো– ” আমাকে চেনো তুমি ? আমার নাম জানলে কি করে ?
তোহা রাগে ফুলছে । নিশ্বাস ঘনঘন নিতে নিতে বললো– “আপনাদের মতো বড় লোকেরা রাস্তায় মেয়ে দেখলেই তাদের কু-প্রস্তার দেওয়াটা আপনাদের স্বভাব। কি মনে করেন আমাদের গরীব বলে আমাদের ইজ্জতের কোনো দাম নেই । মেয়ে দেখলেই কু-প্রস্তাব দিতে হয় । আপনার চরিএ খারাপ । ননসেন্স ।
অরণ্য এবার রেগে উঠে একটা ধমক দিয়ে বললো — –স্টপ– “এই মেয়ে এতো সময় ভালোই বকবক করেছো কিছুই বলিনি । যা ইচ্ছে তাই বলে যাচ্ছো । এখন চাইলেই তোমাকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে পারি আমি ।
তোহা কিছু বলছে না, তোহার ভিতর কিছুটা ভয় কাজ করছে । ফাকা রাস্তা এখন বাড়াবড়ি করাটা ঠিক হবে না ওর সাথে৷ ওর আসল চরিএ তো পেয়েই গেছি বাকিটা পরে দেখবো ।
তোহা কিছু না বলেই এক গুচ্ছ রাগ নিয়ে অরণ্যর দিকে তাকিয়ে পিছন ফিরে হাটা শুরু করলো ।
অরন্য তোহাকে উদ্দেশ্য করে ডাক দিল ! তোহা না শোনার ভান করে হাটতে লাগলো । অরণ্য বাইক স্টার্ট দিয়ে তোহার কাছাকাছি গিয়ে ।
“হেই ইউ … তোমাকে আমি দেখে নিবো ।
কথাটা বলেই অরণ্য চলে গেলো …
তোহা মনে মনে বলছে …
কতোটা খারাপ মনের মানুষ । এভাবে একটা মেয়েকে একা ফেলে চলে গেলো যদি কোনো…….