1. admin@mannanpresstv.com : admin :
লাপাত্তা সেই ১৪ দল - মান্নান প্রেস টিভি
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন

লাপাত্তা সেই ১৪ দল

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৫৫ Time View

অফিস ভাড়া বাকি রেখে উধাও গণতন্ত্রী পার্টি কাগজে থাকলেও বাস্তবে অফিস নেই তরিকত ফেডারেশনের

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর লাপাত্তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের নিবন্ধিত দলগুলো। জনশূন্য এসব দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এখন ধ্বংসস্তূপ। পোড়া এ ভবন পরিণত হয়েছে ভাসমান মাদকসেবী ও পথশিশুদের আড্ডাস্থলে। ভাড়া না দিয়ে অফিস ছেড়ে পালিয়েছেন গণতন্ত্রী পার্টির নেতারা। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাগজপত্রে ঠিকানা থাকলেও বাস্তবে সে ঠিকানায় অফিস নেই তরিকত ফেডারেশনের। তালা ঝুলছে অন্য দলগুলোর অফিসেও। দীর্ঘদিনের ভাড়া বাকি রেখেই কেন্দ্রীয় অফিস ছেড়ে লাপাত্তা হয়েছেন গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দলটির কেন্দ্রীয় অফিস হিসেবে ৬ পুরানা পল্টন, ইশরাত টাওয়ারের দশম তলায় লেখা রয়েছে। কিন্তু রবিবার সরেজমিনে গিয়ে এ ঠিকানায় কোনো পার্টি অফিস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি পাশের ইউনিটের কেউ বলতেও পারছেন না এ ঠিকানায় পার্টির অফিস থাকার কথা। পরে ইশরাত টাওয়ার কর্তৃপক্ষের কাছে খবর নিয়ে জানা গেছে পার্টি অফিস থাকার কথা। ইশরাত টাওয়ারের ম্যানেজার জানিয়েছেন, গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছিল এ ঠিকানায়। তবে এখন নেই। ৫ আগস্টের পর তারা আর কেউ আসেননি। দীর্ঘদিনের ভাড়াও বাকি রয়েছে। এখন একজন ল ইয়ার (আইনজীবী) নতুন করে ভাড়া নিয়েছেন। অফিসের বিষয়ে জানতে ইসির ওয়েবসাইটে দেওয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। টাওয়ার কর্তৃপক্ষ দলটির রেখে যাওয়া কিছু চেয়ার-টেবিল, মাইক ও আসবাবপত্র রেখে দিয়েছেন সিঁড়ির পাশে। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা দেওয়া রয়েছে ফ্ল্যাট এ-১, বাড়ি ৫১/এ, রোড ৬/এ, ধানমন্ডি আ/এ, ঢাকা। তবে বর্তমানে সে ঠিকানায় এ দলের অফিস নেই। এ বাসা অন্য কাউকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এ বাসার কেয়ারটেকার জানান, ৫ আগস্টের আগে এ দলের অফিস ছিল। তখন এমপি সাহেব আসতেন। অনেক লোকজন আসত। কিন্তু ৫ আগস্টের পরে তাঁরা অফিস ছেড়ে দিয়েছেন। নতুন একজনকে এ অফিস ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তবে এ দল কোথায় অফিস নিয়েছে তা তিনি বলতে পারেননি। ইসির ওয়েবসাইটে থাকা মেবাইল নম্বরে কল দিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। পোড়া এ ভবন এখন ভাসমান মাদকসেবী ও পথশিশুদের আড্ডাস্থল। অফিসের আশপাশে বিক্রি হচ্ছে বিএনপির পতাকা, জামায়াতের হেড ব্যান্ড। কার্যালয়ের আশপাশের দোকানিরা বলছেন, ভাসমান মাদকসেবী ও পথশিশুদের আড্ডার জায়গা এখন এ অফিস। মাঝে মাঝে কিছু মানুষ আসে ছবি তুলতে। তারা বলেন, ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকেও নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে সরগরম ছিল আওয়ামী লীগের এ কার্যালয়। দুপুর ১টায় কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে চলে যান তাঁরা। এরপর দুর্বৃত্তরা কার্যালয়ে আগুন দেয়। পরের কয়েক দিনে কার্যালয়ের ভিতর-বাইরের মালপত্র নিয়ে গেছে অনেকেই।

বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল)। ইসির ওয়েবসাইটে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা দেওয়া আছে ২৭/১১/১ তোপখানা রোড, ঢাকা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৫ আগস্টের পর কোনো কেন্দ্রীয় নেতা আসেননি। অন্য নেতা-কর্মীরাও আসেন না। তবে এ অফিসে দলের এক নেতা বসবাস করেন। তিনিই অফিস দেখাশোনা করেন। বর্তমানে তিনি অসুস্থ থাকায় তেমন কথা বলতে পারেননি। 

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা হচ্ছে ৩৫-৩৬ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, ঢাকা। ৫ আগস্টের পরই এ অফিস দখল করে নেন সাবেক কিছু নেতা। ভাঙচুরও করা হয় অফিসে। পরে জাসদের বর্তমান নেতা-কর্মীরা সে অফিস উদ্ধার করতে সক্ষম হন। নেতা-কর্মীরা নিয়মিত অফিসে আসেন না। দলের কেউ এলে তালা খোলা হয়। রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি বসে পত্রিকা পড়ছেন। তবে তিনি দলের কেউ নন। অন্য একজনের জন্য অপেক্ষা করছেন। তবে অফিসে দলের কাউকে না পাওয়া গেলেও অফিসের নিচে চায়ের দোকানে একজন জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের অফিস দখল হয়েছিল, পরে উদ্ধার হয়েছে। ভাঙচুর করেছে অফিসে। জাসদের সভাপতি গ্রেপ্তারের পর নেতা-কর্মীরা আতঙ্কে রয়েছেন। অনেক নেতার নামে মামলাও হয়েছে এবং হচ্ছে।’ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা ৩১/এফ তোপখানা রোড, ঢাকা। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, আগের মতো প্রতিদিন নেতা-কর্মীরা অফিসে আসেন না। মামলা, গ্রেপ্তার এড়াতে বেশির ভাগ নেতা-কর্মী প্রকাশ্যে পার্টি অফিসমুখী হচ্ছেন না। তবে অফিস স্টাফরা আসেন। কিছু কাজকর্ম করেন; চলে যান। একজন স্টাফ জানান, ৫ আগস্টে এ অফিসে ভাঙচুর করা হয়েছে। লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক বলেন, ‘অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। নিয়মিত অফিসে যাওয়া হয় না। নেতা-কর্মীরা আতঙ্কে রয়েছেন।’

জাতীয় পার্টি-জেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা ৫/৫ ব্লক-এ, লালমাটিয়া, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এ অফিসে একজন স্টাফ কাজ করছেন। অফিসে পার্টি চেয়ারম্যানের ছবি ঝুলছে। একটি টেবিল রয়েছে। চেয়ার রয়েছে ৬-৭টি। তবে অফিস স্টাফ দলের নেতাদের বিষয়ে তেমন কিছু বলতে চাননি। বাসার নিচে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় নেতারা কেউ আসেন না। দলের নেতাদের ফোনে কল দিয়ে বন্ধ পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)-এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা ২০-২১ ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট (দ্বিতীয় তলা), ঢাকা। সোমবার সরেজমিনে গিয়ে এ অফিসে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে আশপাশের দোকানদাররা বলেছেন, মাঝে মাঝে এ অফিস খোলা থাকে। তবে নেতা-কর্মী কেউ তেমন আসেন না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ দলের সভাপতি আইভি আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির রয়েছে। নেতা-কর্মীরা কেউ অফিসে গেলেও বেশিক্ষণ থাকেন না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ১৪ দলের সঙ্গে ছিলাম। তবে ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বিবাদ হওয়ায় আমরা অনেক আগে থেকেই ১৪ দলে সক্রিয় নই এবং বর্তমানে ১৪ দলের অন্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ নেই।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Categories

© All rights reserved © 2022 mannanpresstv.com
Theme Customized BY WooHostBD