এক কিশোরীর কাছে অচেনা নম্বর থেকে মোবাইলে ফোন আসে। সেই অপরিচিত ফোনে ঘটে নতুন পরিচয়। সেই পরিচয় গড়ায় পরিণয়ে। প্রেমের প্রহর না কাটতেই বিয়ের আশ্বাসে সেই পূর্ণতায় পৌঁছে যায় ওই সম্পর্ক। কিন্তু শেষমেষ বেঁকে বসে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করা প্রেমিক। কারণ সাবালক নন তিনি। তার বয়স সবে ১৫! আর এখানেই নতুন মোড় নেয় ঘটনার।
বিয়ের দাবিতে ১৯ বছরের সেই তরুণী প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেন। এরপর নানান ঘটনার জন্ম দিয়ে গ্রাম্য সালিশে গভীর রাতে চারজনের সাক্ষীতে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ে দেওয়া হয় দুইজনের।
এভাবেই রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় ১৫ বছরের প্রেমিকের সঙ্গে ১৯ বছরের প্রেমিকার বিয়ে হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১২ আগস্ট) মধ্যরাতের পর উপজেলার বেলপুকুর ইউনিয়নে ওই বিয়ে পড়ানো হয়েছে। আর এ ঘটনাটি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার পাশাপাশি দুই ইউনিয়ন বানেশ্বর ও পুঠিয়ার।
তরুণী (১৯) পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের ভাড়রা গ্রামের। আর ছেলে বেলপুকুর ইউনিয়নের বেলপুকুর থানাধীন (আরএমপি) চক ধাদাশ গ্রামের লতিফুরের ছেলে সিজানুর রহমান (১৫)। তরুণীর খালার বাড়ি চক ধাদাশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে। সেখানে বেড়াতে এলে তরুণীকে দেখে পছন্দ হয় সিজানের। এরপর শুরু হয় ঘটনা। মোবাইল নম্বর জোগাড় করে তরুণীকে ফোন দেয় সিজান। কথা চলতে চলতে তাদের প্রেম এই গভীরতায় পৌঁছে।
তরুণী জানায়, সাড়ে তিন বছরের সম্পর্ক তাদের। বিয়ে করবে বলে অনেকবার শারীরিক সম্পর্কে জড়ায় সিজান। পরে বিয়ের জন্য চাপ দিলে কৌশলে সটকে পড়ার চেষ্টা করে সিজান। তরুণী উপায় না দেখে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ছেলে সিজানের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে বেলপুকুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ঘণ্টাখানেক অবস্থান নিয়ে চলে যায়। রাত আড়াইটার পর স্থানীয়ভাবে সালিশ বসে দুইপক্ষের ৫ জন করে মোট ১০ জন জুড়িবোর্ডে যান।
ফিরে এসে জুড়ি বোর্ডে সিদ্ধান্ত জানান, বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য লতিফুল। তিনি বলেন, এক লাখ ২০ হাজার টাকা দেনমোহরের মাধ্যমে এই বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিয়ের চারজন সাক্ষী ও স্থানীয়দের সইয়ের মাধ্যমে বিয়ের কাজ শেষ হয়।
এদিকে পুঠিয়ার বেলপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অবস্থানের কথা জানতে পেরে থানা থেকে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। দুই পক্ষকে থানায় ডাকাও হয়েছিল। কিন্তু রাতে কেউই আর থানায় আসেনি। পরে কী হয়েছে জানা নেই। তবে এমন কোনো ঘটনা থাকলে তা জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।