সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার আর নেই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মাহবুব তালুকদারের মেয়ে আইরিন মাহবুব এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়ার পর আজ দুপুরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মাহবুব তালুকদার ১৯৪২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলায়। তিনি ঢাকা নবাবপুর হাইস্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করেন।
পরবর্তীকালে তিনি তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়), বাংলাদেশ প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর স্থাপত্য বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করেন।
১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ও মুজিবনগন সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের চাকরিতে যোগ দেন। এ সময় তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।
১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী তাকে উপসচিবের পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির স্পেশাল অফিসার নিযুক্ত করেন। রাষ্ট্রপতি মুহম্মদুল্লাহর সময়ে তিনি তার পাবলিক রিলেশনস অফিসার ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর মাহবুব তালুকদার তার সহকারী প্রেস সচিব (উপসচিব) এর দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তাকে তদানিন্তন ক্যাডার সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যা পরবর্তীকালে বিসিএস প্রশাসন হিসেবে রূপান্তরিত হয়।
একসময়ে তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন। চাকরি জীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয়ে অতিরিক্ত সচিবের পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৯ সালে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন তিনি।
মাহবুব তালুকদার একজন বিশিষ্ট সৃজনশীল লেখক। কবিতা, গল্প, উপন্যস, স্মৃতিকথা, ভ্রমনকাহিনী মিলিয়ে তার প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা চল্লিশ। তিনি ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার স্ত্রীর নাম নীলুফার বেগম। এই দম্পতির দুই কন্যা ও এক পুত্র রয়েছে।
২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান মাহবুব তালুকদার। ২০২২ সাল পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।