টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য মাতব্বরদের নির্যাতনের শিকার হয়ে ডিএম সালমান (১৬) নামে এসএসসি পরীক্ষার্থী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ আজ শুক্রবার সকালে কুমুদিনী হাসপাতাল থেকে সালমানের মরদেহ উদ্ধার করেছে।
সালমান উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের কুড়াতলী গ্রামের শামসুল দেওয়ানের ছেলে। সে তার মাসহ উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের চুকুরিয়া গ্রামে মামার বাড়িতে থেকে লেখাপাড়া করত। গল্লী জনতা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তার চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।
জানা গেছে, সালমানের বন্ধু চুকুরিয়া গ্রামের আলামীন একই এলাকার শফিকের দোকানে তাকে সাথে নিয়ে বিকাশের মাধ্যমে কিছু টাকা লেনদেন করে। আলামীন পরে টাকা দেওয়ার কথা বলে গাঁ ঢাকা দেয়।
গত ৩১ সকালে আগস্ট শফিক সালমানের কাছে টাকা দাবি করে। এতে সালমান অস্বীকৃতি জানায়। ওইদিন বিকেলে শফিক সালমানকে ডেকে এলাকার মাতব্বর সেকেন্দার সিকদারের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে সেকেন্দার, সাইফুল, লতিফ, শফিক সালমানকে কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শারিরিকভাবে নির্যাতন করে। রাতের কোন এক সময় সালমান ওই এলাকার মামুন তালুকদার নামে এক ব্যক্তিকে মুঠোফোনে কল করে তাকে উদ্ধার করতে বলে। মামুন রাতেই তাকে উদ্ধার করে তার কাছে রাখে।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ছয়টার দিকে সালমান বাড়ি ফিরে বিষ পান করে। বাড়ি থেকে বেড় হয়ে এসে আবার মামুনের সাথে দেখা হলে সে বিষ পান করেছে বলে জানায়। পরে তাকে প্রথমে জামুর্কীস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সালমানের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
সালমানের মামাতো ভাই জামুর্কী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সস্পাদক উজ্জল হোসেন খান বলেন, সদা হাস্যজ্জল ও বিনয়ী সালমানকে যারা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে তাদের উপযুক্ত বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দাবি করছি।
মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাইদ বলেন, কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে খবর পেয়ে সালমানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতল মর্গে পাঠানো হয়েছে।