আত্মীয়ের বিয়েতে অংশ নিয়েছিলেন পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে। গায়ে হলুদের আনন্দ করতে গিয়ে একজনের মুখে হলুদ লাগিয়ে দেন। তা দেখে ক্ষিপ্ত স্বামী সবার সামনে তাঁকে মারধর করে বাড়িতে নিয়ে যান। ঘণ্টাদুয়েক পর নিজ ঘরে পাওয়া যায় তাঁর মরদেহ। শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছেন, এটা আত্মহত্যা। গৃহবধূর মা-বাবা বলছেন, তাঁদের মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
নোয়াখালীর হাতিয়ার হরনী ইউনিয়নের কাজিরটেক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার এক সপ্তাহ পর বুধবার রাতে গৃহবধূ জীবনা আক্তারের মা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে জীবনার স্বামী হোসেনসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দুই বছর আগে হরনীর দক্ষিণ আদর্শ গ্রামের নাছির উদ্দিনের মেয়ে জীবনার সঙ্গে বিয়ে হয় আব্দুর রহিম সদুর ছেলে হোসেনের। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত। একাধিকবার গ্রাম্য সালিশে তা মীমাংসা করা হয়। গত ১ সেপ্টেম্বর বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে জীবনাকে উত্তেজিত হয়ে বাড়ি নিয়ে যান হোসেন। এর দুই ঘণ্টা পর জীবনার লাশ পাওয়া যায়।
হরনী ইউনিয়নের কাজিরটেক গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান জানান, গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে আনন্দ করাকে কেন্দ্র করে হোসেন তাঁর স্ত্রীকে পিটিয়েছেন। বিকেলে শ্বশুরবাড়িতে নিজ ঘর থেকে জীবনার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
জীবনার মা পিঞ্জুরা বেগম জানান, ঘটনার পর জীবনা অসুস্থ বলে তাঁদের জানানো হয়। এসে দেখেন- খাটের ওপর জীবনার লাশ পড়ে আছে। পরনে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে যাওয়ার পোশাক। পুলিশ তাঁদেরকে ঘর থেকে বের করে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করেছে। রিপোর্ট তৈরির সময় জীবনার শ্বশুরবাড়ির লোকজন ছাড়া আর কাউকে থাকতে দেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় পুলিশ অপমৃত্যু মামলা করে।
তিনি জানান, তাঁর মেয়েকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। মুখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
জীবনার শ্বশুর আব্দুর রহিম সদু জানান, জীবনা আত্মহত্যা করেছে।
হাতিয়া থানার ওসি আমির হোসেন বলেন, এ ধরনের ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যু মামলা হলেও পরে হত্যা মামলা করা যায়। মেয়ের পরিবার তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেরি করেছে।