আমি হাসিতাম,
তুমি হাসিতে বলিয়া।
আমি কাঁদিতাম,
তুমি কাঁদিতে বলিয়া।
আমি মুঠো মুঠো দুঃখ কুড়াইতাম,
তুমি দুঃখিত ছিলে বলিয়া।
আমি সুখ অন্বেষণ করিতাম,
তুমি সুখী ছিলে বলিয়া।
অভিমানী নেত্র তোমার অশ্রুসিক্ত হইলে
অশ্রুসজল হইত আমারও দুই নয়ন।
তুমি অবসাদগ্রস্থ হইলে
ভাল লাগিত না কিছুই আমার।
হতাশায় নিমজ্জিত হইলে তুমি
চরম হতাশায় ডুবিয়া যাইত আমারও মনন।
ব্যথিত হইলে তুমি,
ব্যথিত হইতাম আমিও।
একাকী কখনো থাকিলে তুমি
একা হইয়া যাইতাম আমিও।
তোমার পছন্দের খাবারের তালিকায়
রাখিয়াছি স্বীয় তালিকায় সেসব খাবার আমিও।
রৌদ্রস্নান তোমার ভীষণ প্রিয়,
আমার নিকটে তাহা কিভাবে হইবে অপ্রিয়?
শিশির ভেজা দূর্বা ঘাসের উপর
হাটিতে তুমি নগ্ন পায়ে।
আমিও তাই পদযুগলকে
নাঙ্গা করিয়া ফেলি সবুজ ঘাস দেখিলে।
পাখির কূজন শুনিতে তুমি
যাইতে ব্যকুল ছিলে বন মাঝে।
তারই পথ ধরিয়া এখনো আমি
ছুটিয়া যাই সেইখানে।
ঝর্ণার গান শুনিতে চাহিতে বলিয়া
আমিও তাহার ব্যতিক্রম হইনি কভূ তাহা ভূলিয়া।
তটিণী-র ডাকে ছুটিয়া যাইতে বলিয়া
আমিও থাকি সতত তার ধারে দাড়াইয়া।
সমুদ্রের তর্জন-গর্জনে ভীষণ ভীত ছিলে বলিয়া
আমিও যাইনি কভূ হেথা,হাটিনি তাহার কূল ঘেষিয়া।
বরষায় ভিজিতে বলিয়া আমিও ভিজিয়া যাই
শাওয়ার হইতে কৃত্রিম বরষার ফোয়ারা ছুটাইয়া।
গুনগুন করিয়া আনমনে গাহিতে বলিয়া
আমিও অকস্নাত গাহিয়া উঠি তোমার মত করিয়া।
পুরুষ মানুষের শব্দ করিয়া কাঁদিতে মানা,
অথচ,দুঃখিত হইলে তুমি কাঁদিয়া ওঠ শব্দ করিয়া।
তাইতো,আমিও তোমার মতন কাঁদিয়া উঠি
সশব্দে কোন বাঁধা না মানিয়া।
পার্থক্য রহিল শুধু দিনশেষে তোমার-আমার মিলনের।
তুমি এখন গাহিয়া উঠ জীবনের জয়গান,
আমি এখন গাহি,বাজাই শুধু বেদনার ঝংকার!!!