দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য ব্যবসা সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার অনন্য সুন্দরী পূর্ণিমা। তবে পথটা সহজ ছিল না তার জন্য। ফিল্ম পলিটিক্সের শিকার হতে হয়েছিল তাকে। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে সেকথা নিজেই জানালেন ‘মনের মাঝে তুমি’ খ্যাত নায়িকা।
পূর্ণিমা বলেন, বর্তমানে চলচ্চিত্র অনেক কমে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, অনেক শিল্পী ঘরে বসে গেছেন। কেউ কেউ পলিটিক্সের কারণে সিনেমার কাজ পাচ্ছেন না। জানেন, আমিও সেই একই পলিটিক্সের শিকার! অনেক সিনেমা থেকেই কোনো কারণ ছাড়া বাদ পড়েছি। আর পলিটিক্স ছিল বলেই এসব হয়েছে। এখন এফডিসিও ছোট হয়ে আসছে।
বড় পর্দায় না থাকার কারণ হিসেবে এই নায়িকা বলেন, বর্তমানে বড় পর্দায় যে সিনেমাগুলো হচ্ছে, সে অনুযায়ী আমি যেমন চরিত্রে অভিনয় করতে চাচ্ছি সেরকম অফার আসছে না। সেজন্যই কাজের পরিমাণ কমে গেছে।
এছাড়া ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাজ নিয়ে পূর্ণিমা বলেন, কিছু গল্প আছে যেখানে হয়তো কিছু আপত্তিকর দৃশ্য অভিনয় করতে হবে। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমি কোনো আপত্তিকর দৃশ্যে কাজ করতে পারব না। ওটিটিতে যেহেতু সেন্সরের কিছু নেই, দেখা গেল ওই গল্পের জন্য দৃশ্যটা খুবই জরুরি ছিল। এমন সব গল্প আমাকে ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। পরে হয়তো আরও ভালো কোনো অভিনেত্রীকে তারা নিয়ে নিচ্ছে। এ কারণে আমি মনে করি, এটা আমারই ব্যক্তিগত সমস্যা।
মুক্তির অপেক্ষায় আছে পূর্ণিমা অভিনীত ও ছটকু আহমেদ পরিচালিত ‘আহারে জীবন’। সিনেমাটিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন ফেরদৌস আহমেদ। এছাড়াও নির্মাণাধীন রয়েছে নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল পরিচালিত ‘গাঙচিল’ ও ‘জ্যাম’ সিনেমা দুটি। দীর্ঘদিন ধরেই সিনেমা দুটির কাজ থমকে আছে। একটিতে তার বিপরীতে আছেন ফেরদৌস, আরেকটিতে আরিফিন শুভ।
জনপ্রিয় এই নায়িকার ভক্তরা এখনো তার নানা বিষয়ে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
১. তার পুরো নাম দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। দেশের মানুষ তাকে পূর্ণিমা নামেই চিনেন। মজার ব্যাপার হলো বাসায় সবাই পূর্ণিমাকে রীতা নামে ডাকে।
২. পূর্ণিমার পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে হলেও জন্ম এবং বেড়ে ওঠা ঢাকায়। জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮১ সালের ১১ জুলাই ।
৩. ১৯৯৭ সাল প্রথম জাকির হোসেন রাজুর ‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমায় রিয়াজের বিপরীতে অভিষেক হয় তার। রিয়াজের বিপরীতে তিনি ২৫টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
৪. পূর্ণমা যখন প্রথম ছবিতে অভিনয় করেন তখন ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন তিনি।
৫. ২০০৭ সালের ৪ নভেম্বরে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্দ হন অভিনেত্রী পূর্ণিমা। তার স্বামীর নাম আহমেদ জামাল ফাহাদ।
৬. শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘ওরা আমাকে ভাল হতে দিল না’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য।
৭. ২০০৭ সালের ৪ নভেম্বরে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্দ হন অভিনেত্রী পূর্ণিমা। তার স্বামীর নাম আহমেদ জামাল ফাহাদ। বিয়ের ৭ বছর পর ২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিল কন্যা সন্তানের মা হন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। মেয়ের নাম আরশিয়া উমাইজা।
৮. সিনেমা জগতে পূর্ণিমার অন্যতম একজন ভালো বন্ধু চিত্রনায়ক ফেরদৌস। জুটি বেঁধে অনেক সিনেমা উপহার দিয়েছেন তারা। চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে দীর্ঘ বিরতির পরে পূর্ণিমা আবারও ফেরদৌসের সঙ্গেই জুটি বেঁধে ফিরেছেন। সিনেমা দুটি হলো ‘গাঙচিল’ ও ‘জ্যাম’। দু’টি সিনেমায় পরিচালনা করছেন নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূল।
৯. নায়িকা পূর্ণিমা শুধু ভালো অভিনয়ই করেন না। খুব ভালো উপস্থাপনাও করেন। এরই মধ্যে বেশ কিছু টেলিভিশন অনুষ্ঠানে উপস্থাপিকা হিসেবে তার দেখা মিলেছে। উপস্থাপনার জগতেও বেশ আলোচিত এই নায়িকা।
১০. রিয়াজের সঙ্গে জুটি হয়ে তুমুল সফলতা পেলেও রুবেল, আমিন খান, ফেরদৌস, মান্নাসহ অনেক নায়কের সাথে অভিনয় করে দর্শকপ্রিয় ছবি তিনি উপহার দিয়েছেন পূর্ণিমা।