মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা) প্রতিনিধি ॥ এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে গ্রামবাসী। কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নের কান্দি গ্রামের যুবলীগ নেতা শাহ জামালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে কান্দি-বিপুলাসার সড়কে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। অভিযুক্ত শাহজামাল ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও কান্দি বসুবেপারি বাড়ির আবদুর রহিমের ছেলে। এ ঘটনায় মনোহরগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ ডিসেম্বর গ্রাম কমিটির সাবেক সভাপতি বয়োঃবৃদ্ধ রুহুল আমিনকে ধাক্কাসহ কিলঘুষি মেরে আহত করেন শাহজামাল।
এ সময় একই গ্রামের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম সাকিব প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহজামাল বাড়ি থেকে ধারালো ছোরা এনে সাকিবের গলায় আঘাতের চেষ্টা করে। সাকিব মাটিতে পড়ে গেলে তার হাঁটুতে ছুরির আঘাত লাগে। পরে তাকে হাসপাতালে নেয়া কিংবা চিকিৎসা নিতেও বাধা দেয় শাহজামাল। পরে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে সাকিবকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। মানববন্ধনে ঐ গ্রামের মাহবুব মিয়া জানান, শাহজামাল অতর্কিতে এসে সাকিবকে ছুরিকাঘাত করে। ইতিপূর্বেও সে এলাকায় নানা অপকর্ম ঘটিয়েছে। তার কোন শাস্তি না হওয়ায় সে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের গ্রাম কমিটির সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, সামান্য কথা নিয়ে শাহজামাল আমার শরীরে আঘাত করে। এ সময় সাকিব প্রতিবাদ জানালে শাহজামাল বাড়ি থেকে প্রায় ২ ফুট লম্বা ছুরি (কাতাল) এনে তার প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে আঘাত করে। অল্পের জন্য ছেলেটি প্রাণে রক্ষা পায়। ইতিপূর্বে জামাল এলাকায় মারামারি-হানাহানিসহ নারিঘটিত নানা অপকর্ম করেছে। আমরা প্রশাসনের নিকট তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আহত ব্যবসায়ী সাকিবের পিতা মোঃ সোহেল মিয়া বলেন, বেশকিছুদিন আগে শাহজামাল মাদক দিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের ফাঁসানোর চেষ্টা করে। পরে পুলিশি তদন্ত ও গ্রামবাসীর সহযোগিতায় আমরা রক্ষা পাই। মূলতঃ পূর্বশত্রুতার জের ধরে সে সামান্য বিষয়ে আমার ছেলেকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। ঘটনার পর পর আমরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
তিনি বলেন, এলাকায় নানা অপকর্ম করে বেড়ালেও তার কোনোধরনের শাস্তি হয়নি। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। স্থানীয় দোকানী মাহবুব আলম বলেন, শাহজামাল ছুরি নিয়ে সাকিবকে আক্রমণ করার সাথে সাথে আমরা তাকে ধরে ফেলি। তার হাত থেকে ছোরাটি কেড়ে নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। পরে পুলিশ এসে ছোরাটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাহজামালের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়ার পর ফোন রিসিভ করে জানান, ‘শাহজামাল হাই কোর্টে আছে। আমি তার ছোট ভাই।’ স্থানীয় লোকজন আরো জানায়, এলাকায় মারামারিসহ অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে শাহজামালের বিরুদ্ধে কুমিল্লা আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে। এ বিষয়ে মনোহরগঞ্জ থানার ওসি মোঃ হানিফ সরকার বলেন, এ ঘটনায় সাকিবের পিতা সোহেল মিয়া বাদী হয়ে মামলা রুজু করেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।