ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে এক মুসলিম তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে গোপাল মল্লিক (৩৫) নামের এক সনাতন ধর্মাবলম্বী যুবক। তরুণীর কাছে পারভেজ বলে পরিচয় দেয় ওই যুবক। পরে তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে গোপাল। এক সময় গোপালের কুপ্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়। গত বুধবার গোপাল আবার কুপ্রস্তাব দিলে তরুণীর কান্নাকাটি ও চিৎকার শুনে লোকজন গোপালকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। গোপালের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তরুণী। গত বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। জানা গেছে, গোপাল মল্লিক অরূয়াইল বাজারের মিষ্টি ব্যবসায়ী সুনিল মল্লিক প্রকাশ চুনিলালের ছেলে। ভুক্তভোগী তরুণী বাজার করতে প্রায়ই অরূয়াইলে আসতেন। সেই সুবাদে গোপালদের দোকানে বসে মিষ্টিও খেতেন।তার ওপর কুনজর পড়ে গোপালের। নিজেকে পারভেজ পরিচয় দিয়ে তরুণীকে নানা ধরনের আপত্তিজনক কথাবার্তা বলে সে। কৌশলে তরুণীর মুঠোফোন নম্বরটি সংগ্রহ করে গোপাল। মুঠোফোনেও তরুণীকে প্রেমের কথা বলতে থাকে। এক সময় প্রেমে পড়েন তরুণী। পারভেজ তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যায়। একদিন তরুণীকে আত্মীয় জুটন মল্লিকের বাসায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এসব দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করে রাখে গোপাল। পরবর্তীতে এসব ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তরুণীকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে ধর্ষণ করে। এ বিষয়গুলো কাউকে জানালে বা মামলা করলে গোপাল তরুণীকে প্রাণনাশেরও হুমকি দেয়। কুপ্রস্তাবে অমত করায় তরুণীর অজান্তে ছবি ও ভিডিও ফেসবুকের সাহায্যে বিভিন্নজনের কাছে পাঠাতে থাকে। তরুণীর নিকটতম স্বজনের কাছেও প্রেরণ করে। এক সময় তরুণী গোপালের আসল পরিচয় পেয়ে হতভম্ব হয়ে পড়েন। নিজেকে মুসলিম পরিচয় দেয়ার কারণ জানতে চায় তরুণী।
এতে তরুণীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে গোপাল বলে, ‘তুই আমার সঙ্গে দেখা কর। নতুবা ফেসবুকসহ সকল ইন্টারনেটে ছবিগুলো ছড়িয়ে দেবো।’ গত বুধবার বিকালে নিজের বোনকে নিয়ে অরূয়াইল বাজারে মিষ্টির দোকানে যান ভুক্তভোগী তরুণী। গোপাল তাকে আবারো কুপ্রস্তাব দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চিৎকার চেঁচামেচি ও কান্নাকাটি করতে থাকেন তরুণী। লোকজন এসে গোপালকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
তরুণী নিজে বাদী হয়ে গোপালের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। গোপালকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।