রাজশাহীর মোহনপুরে গত রোববার অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে না যাওয়ায় ২ জনকে লোহার পাইপ ও লাঠিসোটা দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আহত ২ জন বর্তমানে রাজশাহীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। ‘ভোট দিতে যাসনি কেন?’- এমন প্রশ্ন করেই নবনির্বাচিত এমপি গ্রুপের সমর্থকরা তাদের পিটিয়েছে। ভুক্তভোগীরা হলেন, উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের তাঁতীপাড়া এলাকার তাহের আলীর ছেলে আফসার আলী সরদার (৬০) ও তার ভোট ভাই সাহেব আলী (৪২)। অভিযুক্তরা হলো- একই এলাকার দুলাল, জালাল, আখিরুল ও শামীম। তারা রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের নবনির্বাচিত এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ গ্রুপের অনুসারী।
স্থানীয়রা জানান, ভোটের দিন রোববার বিকালে নিজ গ্রামে এন্তাজের চা স্টলে যান আফসার আলী। এ সময় গ্রামের দুলাল, জালাল, আখিরুল ও শামীমসহ আরও কয়েকজন আওয়ামী লীগ কর্মী সেখানে গিয়ে আফসারকে জিজ্ঞাসা করে, ‘তুই ভোট দিতে যাসনি কেন?’ উত্তরে আফসার বলেন, ‘আমার ভালো লাগেনি, তাই যাইনি।’ তার এমন উত্তরে ক্ষিপ্ত হয়ে রড, লোহার পাইপ ও বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
স্থানীয়রা আরও জানান, আফসারকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে দুলালবাহিনী। কিছুক্ষণ পর তার ছোট ভাই সাহেব আলী তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাকেও পেটায় আওয়ামী লীগ কর্মীরা। এতে দু’জনের হাত-পা ভেঙে যায়। তারা রক্তাক্ত হয়ে পড়েন।এলাকার লোকজন তাদের উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে গেলে বাসার দরজা ভেঙে আরেক দফা পেটানোর চেষ্টা চালায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তারা রাজশাহীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আফসারের ডান হাত ও ডান পা ভেঙে গেছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া তার ছোট ভাই সাহেব আলীর বাম হাত ও ডান হাতের আঙ্গুল ভেঙেছে। তাদের অন্য ভাইদেরও পেটানোর জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা খোঁজাখুঁজি করছে বলে এলাকাবাসী জানায়। বর্তমানে চরম আতঙ্কে রয়েছে তাদের পরিবার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ কর্মীদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আমি কাউকে এ ধরনের কোনোকিছুর নির্দেশনা কোনোদিন দেইনি, আগামীতেও দেবো না। এ ধরনের কাজ যদি কেউ করে থাকে, তাহলে তার দায় তাকেই নিতে হবে। ভুক্তভোগীরা আইনের আশ্রয় নিলে আমি তাদের সহযোগিতা করবো। মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হরিদাস মণ্ডল বলেন, এখানো থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।