২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরে রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের ব্যক্তিমালিকানা ৩৪টি আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স ইস্যু করে জেলা প্রশাসন। এসব অস্ত্র জমা দিতে নির্দেশনা জারি করার পর রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩৩টি অস্ত্র জমা পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে অস্ত্র জমা দেননি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু।
ছাত্র–জনতার গণআন্দোলনকে ঘিরে গত ৪ আগস্ট সংঘর্ষে পুরো লক্ষ্মীপুর শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। টানা ৪ ঘণ্টা ধরে শিক্ষার্থী–জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান টিপুসহ তার লোকজন।
অভিযোগ রয়েছে টিপুর অস্ত্র থেকেও সেদিন গুলি ছোড়া হয়, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এদিন ৪ শিক্ষার্থীসহ ১২ জন নিহত হন। আহত হন শতাধিক। এর মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন গুলিবিদ্ধ।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ওই দিন দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত বাসভবনের ছাদের ওপর থেকে টিপু ও তার লোকজন আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ করেন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের হত্যার ঘটনায় সালাহ উদ্দিন টিপুকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে আওয়ামী লীগের সালাহ উদ্দিনসহ অনেক নেতাকর্মী আত্মগোপন করেন।
জেলা প্রশাসনের জে এম শাখার তথ্যমতে, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরে জেলা প্রশাসন ব্যক্তিমালিকানা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু করে ৩৪টি। কিন্তু গত মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন থানায় জমা পড়েছে ৩৩টি আগ্নেয়াস্ত্র। অবশিষ্ট একটি আগ্নেয়াস্ত্র জমা পড়েনি। সেটি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন টিপুর অস্ত্র। মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেওয়ার সর্বশেষ সময় নির্ধারণ করা ছিল।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান। তিনি বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইসেন্সের বিপরীতে কেনা ১টি আগ্নেয়াস্ত্র জমা হয়নি। এখন সেটি অবৈধ হয়ে গেছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে মাঠে নেমেছে যৌথ বাহিনী।