1. admin@mannanpresstv.com : admin :
লেখিকা: লাখী এর গল্প // ১৬_বছর_বয়স ফুলসজ্জা - মান্নান প্রেস টিভি
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন

লেখিকা: লাখী এর গল্প // ১৬_বছর_বয়স ফুলসজ্জা

এম.এ.মান্নান.মান্না
  • Update Time : রবিবার, ৭ মে, ২০২৩
  • ৯৬ Time View
দরজা খুলে শাওন রুমে ঢুকতেই আমার ভয় লাগতে শুরু হলো। লাগাটাই স্বাভাবিক। কারন কয়েকদিন আগেই আমি আমার বান্ধবীর ফুলসজ্জার গল্প শুনেছিলাম। ওর বিয়ে মাত্র ১০ দিন আগে হয়েছে। ওর বছস ১৫ বছর। আমার চেয়ে ও ১ বছরের ছোটো। ওর নাম তমা। তমা বলেছিল ফুলসজ্জার রাতে নাকি ওর হাসবেন্ড ওকে মেরেছিল। কারন টা অনেক আজীব। ওর হাসবেন্ড নাকি ওর শাড়ি খুলে দিতে চেয়েছিল তখন ও বাধা দিয়েছিল । আর নাকি তমার সাথে অনেক বাজে কাজ করেছে ওর অই হাসবেন্ড যেটা ও বলতেই চাইল না। কিন্তু কি বাজে কাজ? অত শত জানিনা। কিন্তু শাওন দা কি আমাকে মারবে? উনি ত ভাল ছেলে।
হঠাৎ দরজা বন্ধ করার শব্দে আমার ঘোর কাটল। শাওন দা কে দেখে স্বাভাবিক মনে হলোনা যদিও ঘরের ঝাপসা আলোতে কিছুই বুঝতে পারছি না। উনি কি অসুস্থ?। উনি এমনিও অনেক দেরি করে তারপর এসেছেন। এত সময় আমার ২ ঘন্টা ঘুম হত। এখন ১২ টা বাজে।
১০ টার সময় আমাকে শাওনের মা মানে আমার শাশুড়ী আমাকে সাজিয়ে বসিয়ে দিয়ে গেছে। শাওনের কাজিন ভাই দের সব বউ গুলা আমাকে বলে গেছে যে, “ঘুমিয়ে পরো না, শাওনের জন্য অপেক্ষা করবা।” আমি শুধু মাথা নাড়ছিলাম।
বাড়ির বড়রা অর্থাৎ শাওন এর কাকিমা, পিসিমনি আর কে কে যেন বলল, “আজ স্বামী যা চায় তাই ই দিবা।”
স্বামী মানে ত শাওন দাদা। কিন্তু আমার কাছে কি চাইবে?
তাই উল্টো প্রশ্ন করলাম, “কি চাইবে উনি? আমার কাছে ত কিছুই নেই!”
ঘরের সব মেয়েরা জোরে হেসে উঠল। শাওনের পিসি মনি হাসতে হাসতে বললেন, ” বউদি এ ত পুরা বাচ্চাদের মত কথা বলছে🤣🤣।” শাওনের মা আমার দিকে শক্ত মুখ করে তাকিয়ে আছে।
“গ্রামের মেয়েরা একটু কম বুঝে maybe” বলে হেসে দিলো শাওনের এক কাজিন।
“আজ ই সব বুঝে যাবে। যাই হোক সবাই বের হও এখন। শাওন কে পাঠাই”, বললেন শাওনের কাকিমনি।
সবাই মুচকি হাসছিল।আমিও বুঝতেছিলাম না কি হচ্ছে আমার সাথে।
সবাই যাবার সময় ঘর অন্ধকার করে দিয়ে গিয়েছে। অন্ধকার আমার ভালো লাগে না। তাও বসে আছি। মরিচ বাতি গুলোর হালকা আলো ভালই লাগছে।
যাই হোক বর্তমান সময়ে আসা যাক।
আমি ঘাট থেকে নেমে ওনার কাছে গেলাম। শাওন দা দরজায় হেলান দিয়ে দাড়িয়ে ছিল।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি ঠিক আছেন? নাকি অসুস্থ?
উনি আমার দিকে নরম চোখে তাকালেন কিন্তু কোনো উওর দিলেন না।
আমি আবার বললাম, কাউকে ডেকে আনব?
এই কথা বলে কোনো উওরের অপেক্ষা না করেই আমি দরজার খুলতে গেলাম। তখন উনি হঠাৎ আমার হাত ধরলেন। আমি ভয় পেয়ে গেলাম।
আমি শুনলাম উনি বললেন, “Don’t go. Stay with me.”
আমি দ্বিধায় পরে বললাম, আচ্ছা।
কিন্তু শাওন দা আমার হাত ধরে দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে রইল। আমি কি করব বুঝতেছি না। এইভাবে কি সারারাত দাড়িয়ে থাকব? আমিই কয়েক মিনিট পর হাত টা ছাড়িয়ে নিয়ে বিছানার দিকে যেতে লাগলাম। তখন শাওন বলল, “সব তোমার নাটক ছিল! সব মিথ্যা ছিল?”
আমি ঘুরে তাকালাম কারন শাওন দা
কি বলছে কিছু বুঝলাম না। উনি কি মদ খেয়েছেন? এইজন্য ই কি ২ ঘন্টা দেরি করে এসেছেন?
উনি আস্তে করে কার একটা নাম বললেন কিন্তু আমি ঠিক শুনতে পেলাম না। তারপর উনি আমার দিকে এগুতে লাগলেন। আমি কি করব বুঝতে পারছি না।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই শাওন দা আমাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিল। আমি বললাম, “কি করছেন আপনি?”
শাওন আমার দুই হাত বিছানার সাথে চেপে ধরল।
– ছাড়ুন আমার লাগছে। ব্যথা পাচ্ছি।
শাওন আমার দুই হাত ওর এক হাতের মুঠোতে ধরল। আর অন্য হাত দিয়ে আমার শাড়ির আচল বুক থেকে সরিয়ে দিল। সবকিছু এত আচমকা হচ্ছে যে আমি কেদে দিলাম।
– প্লিজ ছাড়ুন আমাকে। কি করেছি আমি।
শাওন আমার কোমড়ে হাত দিল। আমার সারা শরীর শিউরে উঠল।
আমি কাদতে কাদতে বললাম, “আপনি খুব খারাপ। ছাড়ুন আমাকে। লাগছে আমার।”
শাওন আমার দুই হাত ছেড়ে দিল। সাথে সাথে আমি ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু পারলাম না।
শাওন ওর আঙুল দিয়ে আমার ঠোঁটের লিপস্টিক মুছে দিল। আমি ওনাকে ধাক্কা দেবার চেষ্টা করে বললাম, “শাওন দা প্লিজ ছাড়ুন আমাকে।”
আমার শরীর খুব দুর্বল লাগছে। সকাল থেকে না খাওয়া। আর এখন এসব। আমার গায়ে আর একটুও শক্তি নেই। তাই আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম।
যখন চোখ খুললাম তখন সকাল হয়েছে। প্রায় সাড়ে সাতটা। মাথা ঝিম মেরে আছে। আশেপাশে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করলাম আমি কোথায় আছি। হঠাৎ গতকাল রাতের কথা মনে এলো। মনে পরাতেই নিজের শরীরের দিকে তাকালাম। গায়ে একটা চাদর দেওয়া। আমি তাড়াতাড়ি উঠে বসে নিজের শাড়ি ঠিক করে নিলাম। রুমে শাওন নেই। কোথায় উনি?
কাল রাতে কি হয়েছিলো! আমি জ্ঞান হারানোর পরর আর কিছুই মনে নেই আমার। জলদি ফ্রেস হয়ে নিচে নেমে আসলাম। কাকিমনি, পিসিমনি আর আমার শাশুড়ী নাস্তা তৈরি করছেন।
আমাকে দেখে কাকিমনি মিষ্টি হাসি দিয়ে বললেন, এত জলদি ঘুম ভেঙে গেল?!
আমি কিছু বলার আগেই পিসি মনি বললেন, এখানে তোর কোনো কাজ নেই। তুই উপরে শাওনের কাছে।
শাওনের মার মুখেই শুধু হাসি নেই। উনি অনেক চিন্তিত মনে হচ্ছে।
৮ টার পরেই সবাই নিচে আসতে লাগল নাস্তা করতে। শাওনের মা আমাকে বললেন, শাওন কোথায়, এখনো ত এলোনা! এত দেরি ত ও করেই না।
শাওনের কাজিন বলে উঠল, প্রতিদিন আর আজ কি এক?
সবাই হেসে উঠল।
আমি মনে মনে ভাবলাম যে, শাওন দা ত রুমে নেই, নিচেও কোথাও নেই। গেলেন কোথায় উনি?
আমি বলে উঠলাম, “উনি ত নেই উপরে।”
– নেই মানে!
আমার শাশুড়ী তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন।
– কোথায় ও? (পিসিমনি)
– আমি জানিনা।
আমি দোটানায় পরে গেলাম। এ কি অবস্থা সবাই আমাকে কেন জেরা করছে! কাল রাতে উনি আমার সাথে যা করেছে এর পর আমার উনার বিষয়ে জানার আর ইচ্ছা নাই।
পিসিমনি ভ্রু কুচকে আবার বললেন, জানিনা মানে কি! রাতে ছিল না তোর সাথে?
আমি বললাম, ছিল ত কিন্তু….
-কিন্তু কি? (শাশুড়ী)
আমার শাশুড়ী ব্যস্ত হয়ে পরলেন। ছেলের কোনো খবর কেউ জানেনা বাসার এইজন্য।
আমি এখন কি বলব? কিভাবে বলব আমি জ্ঞান হারানোর পর কি হলো কিছুই ত জানিনা। আর কাল রাতের কাহিনীও খুব একটা সুন্দর না যে বলব।
পিসিমনি বলল, আরে বৌদি শান্ত হও। গেছে হয়ত কোথাও কাজে। ছেলে কি পিচ্চি যে কেউ ধরে নিবে।
সবাই খেতে বসে পড়ল। শুধু শাশুড়ী মা ই বাকি রইলেন। ছেলে না আসলে নাকি খাবেন না।
আমি কাল থেকে না খেয়ে আছি এখন উনার জন্য আরো না খেয়ে থাকতে পারব না। আমি খেতে বসে পড়লাম। আমার শাশুড়ীর সেটা ভালো লাগল না তার চাহনি দেখলে বুঝলাম। তাতে আমার আপাতত কিছু যায় আসেনা। আমি আগে খেয়ে নেই। সবার খাওয়া চলছে এমন সময় বাসার টেলিফোন বেজে উঠল। শাশুড়ী মা জলদি ফোনের কাছে গেলেন ধরার জন্য।
– হ্যালো
– হ্যা। হ্যালো মা আমি….
– শাওন? কই তুই?
সবাই শুনছে আর খাচ্ছে। পিসি মনি বলল, দেখল?! পাগোল হয়ে গেছিলে ছেলের চিন্তায়।
শাওন ওপাশ থেকে বলল, “আমি ঢাকা চলে এসেছি।”
আমার কাজ ছিল তাই।
শাওনের মায়ের মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পরল।
তিনি বললেন, “কি? কোথায় তুই? তোর কি বিয়েটা ছেলেখেলা মনে হয়? আজ না বৌভাত। কখন গেছিস তুই?”
– মা প্লিজ। ধরে বেধে বিয়ে দিয়েছ ভাল কথা। কিন্তু এসব রিচুয়াল আমার দ্বারা হবেনা সত্যি। (শাওন)
– তুই আজ ই ফিরে আসবি।
– আমার প্রজেক্টে কাজ আছে আজ থেকে। বাই মা। লাভ ইউ।
সবাই মোটামুটি খাওয়া বন্ধ করে উৎসুক চোখে শাওনের মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। কি হলো কেউ বুঝছে না।
সবাই খাওয়া থামালো। তাই আমিও থামালাম খাওয়া।
শাশুড়ী মা বললেন, “মিলা আমার সাথে উপরে আসো।”
আমি মনে মনে বললাম এখন আবার কি হলো? আমি কি কিছু ভুল করেছি! শাওন দা কি আমার নামে কিছু মিথ্যা বলে দিয়েছে?
“কি হয়েছে বৌদি?” কাকিমনি আর পিসিমনি বলল।
শাওনের বাবা বলল, “কোথাও ও?”
“ঢাকা তোমার ছেলে” উওর দিলেন তিনি।
“কি হলো আসো আমার সাথে” (শাশুড়ী মা আমার দিকে কঠর চোখে তাকিয়ে বলল)
“মেয়েটা খাচ্ছে তুমি ওকে টানাটানি করছ কেন?” বললেন শাওনের বাবা।
– তুমি তোমার কাজ করো, মিলা উপরে আসো। (শাশুড়ী)
আমি খাওয়া ছেড়ে উঠলাম। আমার পিছে পিছে কাকিমনি আর পিসিমনিও আসলো।
আমাকে শাওনের রুমে নিয়ে দাড় করানো হলো।
– আমার ছেলে চলে গেল আর তুমি আমাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করোনি?
আমি হতাস গলায় বলতে লাগলাম আমি জানিনা উনি কখন গেছেন সত্যি।
– এখান থেকে যেতে শাওনের কমপক্ষে ৫ ঘন্টা ত লাগবেই। এখন সে ঢাকাতে মানে ও অবশ্যই মধ্যরাতেই বের হয়েছে। (শাশুড়ী)
পিসিমনি বলল, কাল আসে নাই ও রুমে?
– এসেছিল।
– কখন? (কাকিমনি)
– উনি ১২ টায় এসেছিলেন।
– এত দেরি? আমি ত ওকে ১০ টায় ই পাঠিয়েছিলাম। ফুলসজ্জার রাতেই ও চলে গেল? বাহ! ঠিক করে নি ব্যাপার টা। আজ বৌভাত। কি অবস্থা হবে এখন? (পিসিমনি)
– হবে না বৌভাত। কোনো অনুষ্ঠানের দরকার নেই। (রেগে এই কথা বললেন শাশুড়ী মা)
– ১২ টায় এসে কি করেছে? সাথে সাথেই চলে গেছে? (প্রশ্ন করলেন পিসিমনি)
এখন আমি কিভাবে বলব যে উনি এসে আমার সাথে… না না ছি ছি এগুলা বলতে পারব না। তাই মিথ্যা বললাম, হ্যা চলে গেছেন সাথে সাথেই।
– তুই ডাকলি না কাউকে? (পিসিমনি)
আমি চুপ করে রইলাম।
শাওনের মা বললেন, সত্যিই এই মেয়ে কিভাবে ওর সাথে সংসার করবে?”
– ওর উপর রেগে লাভ আছে বৌদি, তোমার ছেলে কি কথা শোনার মত??! (পিসিমনি)
কারো কথায় কান না দিয়ে রেগে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন শাওনের মা।
(চলবে)

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Categories

© All rights reserved © 2022 mannanpresstv.com
Theme Customized BY WooHostBD