“ভাবি এই বুড়ো লোকের সাথে আমি সংসার করবো না।
বাসর রাতে নিজের প্রিয়ো ননদের কাছ থেকে এমন কথা আশা করে নি তিশা….
একটু থেমে নওরিন আবারও বলে উঠে,
– কাল তো বউভাতে এসে, আমাকে সাথে করে নিয়ে যাবা।আমি থাকবো না এই বুড়ো লোকের সা.থেএএএএ….”
এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো শেষ করে পেছন ফিরে তাকায় নওরিন।পেছনে তার বর দাড়িয়ে আছে।জিহ্বায় কামর দেয়।ইস্ সব শুনে ফেললো নাতো!
আজই পারিবারিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে নওরিন আর ইসরাক ইমতিয়াজ।দেখতে গিয়ে আচমকায় বিয়ে যাকে বলে।বিয়ের কয়েক মুহূর্ত আগেও নওরিন জানতো না একটু পর তার বিয়ে হবে।।কিন্তু ভাগ্যের স্রোত কখন কাকে কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে যায় তা কেবল সময়ই বলতে পারে।
নওরিনের বিয়ের ঘটনাটি ছিল বেশ মজার।
নওরিন বেশ ক্লান্ত হয়ে ঘেমে নেয়ে কলেজ থেকে ফিরে ডোর বেল বাজাচ্ছে।কিন্তু কেউ খুলছে না।বেশ কয়েকবার বেল বাজানোর পর ছোট ভাবি এসে দরজা খুলে দেয়।নওরিন বেশ বিরক্ত হয়ে ভাবিকে বলে উঠে
-ভাবি এতো সময় লাগে দরজা খুলতে?
ছোট ভাবি ইশারায় নওরিনকে থামিয়ে দেয়!নওরিন ভেতরে উকি দিয়ে দেখে ড্রইং রুমের সোফায় অনেক লোকজন বসা। নওরিন বেশ অবাক হয়।কেউই তার চেনা নয়।
ছোট ভাবি নওরিনের মাথায় একটা ওড়না দিয়ে ঘোমটার মতো করে দেয়।এবারও নওরিন বেশ বিরক্ত হয়।একেই তো তার গরম লাগছে তার উপর ছোট ভাবি হিজাবের উপর ওরনা পড়িয়ে দিয়েছে।নওরিন রাগে গজগজ করছে।কিন্তু কিছু বলছেনা।
ছোটভাবি নওরিনকে টেনে ভেতরে নিয়ে যায়।লোকজনের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় নওরিনকে ইসারায় সালাম দিতে বলে।নওরিনও সালাম দিয়ে ভেতরে চলে যায়।ঘরে গিয়ে নওরিন ভাবিকে প্রশ্ন করতে থাকে।
-“এরা কারা?কোথা থেকে এসেছে?কেন এসেছে?”
-তোমার জন্য এসেছে ননদিনী! যাও গোছল করে নাও।আজ যে তুমি রাজ রানী হবা!!
নওরিন ভুরু কুচকে প্রশ্ন করে উঠে,
-মানে কি?
ছোট ভাবি আর কিছু না বলে জোর করে তাকে ওয়াশরুম পাঠিয়ে দেয়।
ওয়াশরুম থেকে বের হতেই নওরিনের মা এসে নওরিনের হাতে একটা লাল শাড়ি ধরিয়ে দেয়।
নওরিন বেশ অবাক হয়ে তাকায় মায়ের দিকে,
-এটা কি আম্মু
-দেখিসনা শাড়ি
-এটা কি করবো?
-পড়বি।এটা তোর বিয়ের শাড়ি।বাহিরে পাত্রপক্ষ অনেকক্ষণ ধরে বসে আছে শাড়িটা পড়ে রেডি হয়ে নে।তিশা(ছোট ভাবি) আর প্রিয়া(বড় ভাবি) আছে ওরা তোকে হেল্প করবে!
নওরিন যেন আকাশ থেকে পড়ে।
-কি বলো আম্মু।আমি বিয়ে করবো না।আর এভাবে বিয়ে হয় নাকি।চিনি না জানি না একটা লোককে বিয়ে করবো কিভাবে?আমি বিয়ে করবো না।
নওরিনের মা একটা ধমক দেয়,
-নওরিন আমার কসম লাগে বাহিরে পাত্র পক্ষ বসা আছে কোনো সিনক্রিয়েট করবিনা কিন্তু।আর তোর বাবাও তাদের কথা দিয়ে দিয়েছে।বিয়েটা হবে।তুই চাইলেও হবে না চাইলেও।
-জোড় করবা নাকি?আমি কি পড়াশোনা করবো না? আমি তো সবে….এভাবে আমার জীবনটা শেষ করে দিওনা!
-আস্তে কথা বল।ছেলেপক্ষ কথা দিয়েছে তোকে পড়তে দেবে অসুবিধা হবে না।
-আম্মু প্লিজ। এভাবে বিয়ে হয় না..যার সাথে ঘর করবো তাকেই তো নিজের চোখে দেখলাম না এভাবে বিয়ে হয়? আর আমার অতীত সে কি মানবে?
মা নওরিনকে থামিয়ে দেয়,
-তই অতীতে যা কান্ড ঘটিয়ে রাখছিস তাতে তো তোর যে আদোও বিয়ে দিতে পারবো এটাই তোর বাবা আর আমার কল্পনার বাহিরে।সব জেনে শুনে যে রাজকুমার নিজে পায়ে হেটে তোকে বিয়ে করতে এসেছে এটাই অনেক।তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে নে রিনি।
নওরিন ভুরু কুচকে তাকায় মায়ের দিকে
-ছেলে সব জেনে শুনে আমাকে বিয়ো করতে চেয়েছে?
নওরিনের মা কিছু না বলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে।প্রিয়া আর তিশা নওরিনকে জানায় ছেলে সব জেনেই তাকে বিয়ে করতে চায়।ওনারা নিজে থেকেই এসেছেন।ছেলের দাদুর নাকি তোকে ভারি পছন্দ।
নওরিন ভুরু কুচকে প্রশ্ন করে
-কে জানিয়েছে? তোমরা?
তারা মাথা নাড়ায়
-না আমাদের কিছু বলতে হয় নি।
নওরিন মনে মনে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়।
এবার আর নওরিন কোনো বাঁধা দেয় না।অবশেষে বিয়ে হয়ে যায় নওরিনের।কবুল বলার আগ পর্যন্ত সে নিজের বরের মুখ দেখে নি।
পরে বর বউকে একসাথে বসানোর সময় অবশ্য একবার ইসরাকের সাথে নওরিনের চোখাচোখি হয়েছিলো।।
রাত এগারোটা নাগাত নতুন বউকে এবাড়িতে আনা হয়।নওরিন বাড়ির দরজার দাড়িয়েই উপলব্ধি করে সে আসলেই হয়তো কোনো রূপকথার রাজকুমারকে বিয়ে করেছে।কারন এটা তো কোনো বাড়ি নয় সদ্য একটা রাজপ্রাসাদ।
ইসরাক পেশায় একজন ইংরেজি প্রভাষক।পারিবারিক ভাবে তার বাবা চাচারা ব্যবসায়ী হলেও ইসরাকের তাতে বিন্দুমাত্র ইনট্রেস্ট নেই বললেই চলে।।তবে নওরিন ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ুয়া ছাত্রী।তাদের মাঝে বয়সের বেশ ফারাক রয়েছে।তাতে
বাসর ঘরে বেশ অনেক্ক্ষণ যাবত বসে আছে নওরিন তার বরের অপেক্ষায়। ঘড়ির কাটা ৩টা ছুই ছুই।মাঝে কয়েকবার চোখ লেগে গিয়েছিলো তার তবুও সে বহু কষ্টে নিজেকে সামলে রেখেছে।ঘুমিয়ে পড়লে চলবে না।বর আসবে বরকে সালাম করবে।তকে অনেক কিছু বলার আছে।সত্য মিথ্যা অনেক কিছু জানানোর আছে।এছাড়া…আরো কতো কিছু।এসব ভাবতে ভাবতে নওরিনের চোখ মুখ লজ্জায় লাল হয়ে উঠছে।
অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলো।ইসরাকের কোনো খবর নেই।নওরিন বেশ রেগে যায়।আজকে তো বাসর রাত।নওরিন রাগে গজ গজ করতে করতে ছোট ভাবিকে কল দেয়।
দুই বার কল বাজার পরপরই সে রিসিভ করে নেয়।
-কি রে রিনি আজনা তোর বাসর বরকে আদর করা ছেড়ে আমায় কেন ফোন করেছিস?নিজে না হয় ঘুমোবি না তাই বলে কি আমাকেও ঘুমোতে দিবি না?
কথাগুলো বলেই তিনি দাঁত খিল খিল করে হেসে উঠেন,
নওরিন রাগে গজ গজ করতে করতে ভাবি কে বলে উঠে,
-ভাবি তোমাদের জামাইকে আমার একদম পছন্দ হয় নি।কাল তো আমার বউ ভাত তোমরা সবাই আসবা এসে, আমাকেও সাথে করে নিয়ে যাবা।আমি থাকবো না এই বুড়ো লোকের সা…
পেছনে তাকে সদ্য বিয়ে করা বর দাড়িয়ে তা নওরিন খেয়াল করেনি।
ইসরাক কিছুক্ষণ নওরিনের দিকে তাকায়।নওরিন ভয় পেয়েছে।নওরিন গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যায়।তারপর ভাবিদের শিখানো মতে সালাম করতে যায় ইসরাককে।ইসরাক খপ করে ধরে ফেলে নওরিন কে।নওরিন একটু লজ্জা পায়।সিনেমার রোমান্টিক সিনগুলো মনে হয় এখন তার জীবনে ফুটে উঠতে চলেছে।কিন্তু নওরিনকে অবাক করে দিয়ে ইসরাক তাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে দুরে সরিয়ে দেয়।নওরিন দুই ধাপ পিছিয়ে যায়।হটাৎ অনাকাঙ্ক্ষিত ধাক্কায় টাল সামলাতে পারেনি।
-আমাকে সালম করার প্রয়োজন নেই।
-এটা নিয়ম
-দরকার নেই
নওরিন একটু অবাক হয়….হয়তো তখনকার ফোনে বলা কথাগুলো শুনে রাগ করেছে লোকটা।
নওরিন ছোট্ট করে সরি বলে
-আসলে আমি ওভাবে বলতে চাই নি
ইসরাক ধমক দেয়
-পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে নেই জানেন না!
-সরি।
ইসরাক আর কিছু বলে না।দম দম করে ওয়াশরুমে চলে যায় । ফ্রেশ হয়ে খালি গায়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে।নওরিন পূর্বের স্থানে একই ভাবে দাড়ানো।ইসরাককে এভাবে দেখে সে একটু লজ্জা পায়।লজ্জায় মাথা নিচু করে নেয়।
ইসরাকের অবশ্য সে দিকে কোনো খেয়ালই নেই।সে নিজের মতো একটা টিশার্ট পড়ে বিছানা থেকে বালিশ আর বেড কাভার হাতে নিয়ে হাটা ধরে।
নওরিন পেছন থেকে ডেকে উঠে,
-কোথায় যাচ্ছেন?আজ তো,
ইসরাক পেছন ফেরে তাকায়। নওরিন দমে যায়
-তা জেনে আপনার কাজ নেই এমন সং সেজে বসে থাকার দরকার নেই জামা কাপড় ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ুন।
নওরীন মাথা নিচু করে নেয়।ইসরাকের প্রত্যেকটা কথা যেন তার বুকে গিয়ে আঘাত করছে।আজই তো তাদের বিয়ে হয়েছে।এ কেমন পুরুষ মানুষ যে
নওরিন রেগে যায়,
-কি বললেন?সং সেজেছি মানে?আমিই হয়তো প্রথম কোনো বিয়ের কনে যে বিয়েতে চোখে মুখে এক ফোটা মেকআপও লাগায় নাই।কোন দিক দিয়ে আমাকে সং মনে হচ্ছে আপনার?বিয়ে করেছেন আমাকে, সন্মানও করতে হবে আমাকে।
ইসরাকের মুখে বিরক্তের ছাপ,
-দেখুন,
নওরিন আবারও বলে উঠে
-আপনি ভালো করে দেখুন আমাকে।কোন এঙ্গেলে আমাকে সং মনে হচ্ছে?এই শাড়িটাও তো আপনারাই দিয়েছেন এটা পড়ে কি সং মনে হচ্ছে?যদি মনে হয়ে থাকে দেন এটা আপনাদের চয়েজের সমস্যা আমার নয়।
ইসরাক পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নওরিনকে।চোখ মুখে তার বিরক্তের ছাপ,
-প্লিজ আমার ভিষন ঘুম লাগছে আপনার সাথে একদম কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।
ইশরাক চলে যেতে যেতে নওরিনকে বলে উঠে,
-কাল আপনার পরিবার চাইলে আপনাকে নিয়ে যেতে পারে।আমি বা আমার পরিবার কারোরই কোনো অসুবিধা নেই।এমনিতেও আমি আপনাকে বাধ্য হয়েই বিয়ে করেছি….দাদুভাই বাধ্য করলো
-কেন?
-সেটা দাদু ভাইকে প্রশ্ন করো
ইশরাক আর কিছু বলে না।দম দম করে সেখান থেকে চলে যায় নওরিনের গাল বেয়ে কয়েক ফোটা পানি মেঝেতে পরে।
আর বার বার মাথায় একটা কথায় ঘুরতে থাকে” বাধ্য হয়ে…..”
সকাল সকাল দরজার নক করার শব্দে নওরিন লাফিয়ে উঠে।দ্রুত শাড়ি ঠিক করে নেয়।ভোরের দিকে সে কান্না করতে করতে সোফাতেই ঘুমিয়ে পড়েছিলো।
নওরিন দরজা খুলে দেয়।ইসরাক রুমে প্রবেশ করে।নওরিনের মুখের দিকে তাকায়।মুখটা শুকিয়ে গিয়েছে।সারাদিন কিছু খাওয়া হয় নি।রাতেও বিয়ের চাপে কিছু খায়নি।চোখটা ফুলে আছে।বোধহয় কান্না করেছে।কালকে পড়নে বিয়ের শাড়িটাও খুলে নি।
ইসরাক নওরিনকে ছোট্ট করে সরি বলে।নওরিন অবাক হয়ে তাকায় ইসরাকের দিকে।
ইসরাক নওরিনকে ওয়াশরুম দেখিয়ে দেয়।
-শাওয়ারটা নিয়ে নিন।একটু পর লোকজন আসবে আপনাকে দেখার জন্য।
নওরিন ল্যাগেজ খুলতে যায়।ইসরাক বাধা দেয়।আলমাড়িতে থেকে একটা প্যাকেট বার করে নওরিনের হাতে ধরিয়ে দেয়।
-এগুলো পড়ে নিন।
নওরিন মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।
ইসরাক বিছানায় গিয়ে গা এলিয়ে দেয়।সারা রাত সে ছাদে বসে কাটিয়েছে।বিছানা দেখে সে বেশ বুঝতে পারে নওরিন রাতে বিছানায় শোই নি।ইসরাক মনে মনে কিছু একটা তার ভাবনায় চিড় ধরে নওরিনের ডাকে,
-শুনছেন?
ইসরাক মাথা তুলে তাকায়।
-কিছু বলবেন?
-আসলে পানি অনেক ঠান্ডা আমার কোল্ড এ্যাল্যার্জি আছে এতো সকালে যদি আমি ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করি তাহলে,
নওরিন কথা শেষ করার আগেই ইসরাক ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। নওরিন অসহায়ের মতো তাকিয়ে আছে তার যাওয়ার দিকে,
নওরিন বিছানার একপাশে গুটি শুটি হয়ে বসে পড়ে।মনে মনেই ভাবতে থাকে,
“আদৌও কি লোকটা তার ব্যাপ্যারে সবকিছু জানে?লোকটা কি সব জেনে তাকে খারাপ ভেবে বসে আছে?আর যদি খারাপই ভাবে তো বিয়ে কেন করলো তাকে?”
নওরিন বসে বসে এই সব ভাবছিলো আর এদিকে ইসরাক কিচন থেকে একবালতি গরম পানি নিয়ে বার হওয়ার সময় দেখা হয় তার মা জিনাত সিকদারের আর মেজো খালা শেউলি পারভিন সাথে।জিনাত অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ছেলের দিকে আর শিউলি পারভিন মুখ টিপে হাসছে!
তিনি ইসরাককে প্রশ্ন করেন,
-গরম পানি কি করবা?
-গোসলের জন্য আম্মু
-বাবা তুমি তো কখনো গরম পানি দিয়ে গোসল করো না?
-আম্মু নওরিনের জন্য
তিনি বেশ ঠান্ডা গলায় প্রশ্ন করেন
-তুমি কি আগে কখনো কিচেনে এসেছো?বাড়িতে তো আরো মানুষ ছিলো তাদের ডাকতে পারতে।
-আসলে এতো সকালে কাউকে ডিসটার্ব করতে চাইনি!
তিনি আর কিছু বলেন না।ইসরাকও বালতি নিয়ে ঘরের দিকে প্রস্থান করে।
এদিকে শিউলিপারভিন জিনত শিকদারের কানে কানে বলতে থাকে,
-দেখলি আপা তোর ছেলেতো বিয়ের পর পর দিনই বউয়ের গোলাম হয়ে গেছে।তোর ছেলের বউ মনে হয় বাসর রাতেই বিড়াল মেরে দিয়েছে….
এইসব বলে তিনি জোরে জোরে হাসতে শুরু করেন।আর এদিকে জিনাত সিকদারের অন্তর পুড়ছে।ছেলে বোধয় সত্যিই এবার পর হয়ে গেলো….
শিউলি পারভিন বোনকে আরেকটু খুঁচিয়ে বলে উঠে
-বোধর তোর ছেলের সাথে বিয়ের আগেই প্রেম ছিলো না হলে বিয়ে নিয়ে ছেলের এতো কিসের পাগলামো!
নওরিন গোসল শেষ করে বাহিরে এসে অনেক্ক্ষণ যাবত শাড়ি পড়ার চেষ্টা করছে।কিন্তু পারছে না।নরমান শাড়ি হলে হয়তো পড়ে ফেলতো তবে এতো ভারি শাড়ি ঠিক সামলাতে পারছে না সে।নওরিন বিছানার দিকে তাকায়।ইসরাক সুয়ে সুয়ে ফোন চাপছে।নওরিনের দিকে তার কোনো খেয়ালই নেই।
সিনেমা হলে হয়তো বর এতক্ষণ উঠে এসে বউকে শাড়িটা পড়িয়ে দিতো,
ইসরাক বলে উঠে,
-এটা সিনেমা নয়!!!
নওরিন লজ্জা পায়।কথাটা সে হয়তো একটু জোড়েই বলে ফেলেছে।
একটু পরই দরজায় নক পরে
-আসবো ভাইয়া?
ইসরাক বলে উঠে,
-আয়
রুমে প্রবেশ করে ইসরাকের ছোট বোন ইশা।
নওরিন ইশার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
ইশা মুচকি হেসে নওরিনকে প্রশ্ন করে,
-কি গো ভাবি চিনতে পেরেছেন নাকি ভুলে গিয়েছেন।
নওরিন ছুটে গিয়ে ইশাকে জড়িয়ে ধরে,
ইশা নওরিনকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই নিজে থেকেই বলে উঠে,
-বেস্টু তোর বর আমার ভাই।আপন বড় ভাই৷ আর আপনি আমার আমন ভাবি….সার্প্রাইজ!!
[ইশা আর নওরিন স্কুল লাইফের বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো।কলেজে উঠার পর ইশা শহরে চলে যায় আর নওরিন কিছু জটিলতার কারনে সেখানকারই কলেজে ভর্তি হয়।একবছর পর দুজন বেস্ট ফ্রেন্ডের দেখা হয়েছে।তারা নিজেরা নিজেদের মতোই কথা বলতে ব্যস্ত আর এদিকে ইসরাক বিছানায় বসে তাদের কান্ড দেখে মুচকি হাসছে]