নিজেকে আড়াল করে রাখি
কখনো বা চতুষ্পদের মোহাবিষ্ট হয়ে পড়ি।
সবেগে অনুসরণ করি জন্মাহত অনুতাপ
দূরবর্তী দৃশ্যাবলীর তামাশা দেখি
দিনশেষে সূর্য অস্ত যায়
দুখের বেসাতি ঝুড়ি বোঝাই করে।
অন্তরে তুমুল বর্ষণ হয়,
বৃক্ষ কাঁদে তাই কেউ এই শব্দ শুনতে পায় না।
কিন্তু; আমি- একপায়ে দাঁড়িয়ে
ক্রন্দনরত তীর ভাঙা নদীর মুমূর্ষু শব্দ শুনি।
বৃক্ষ তাই জন্ম হতে আমার পদতলে শিকড় গজায় হাঁটতে পারিনা,মানুষের মতো হাঁটতে চাই…
না মৃত্তিকা চুম্বক আমাকে আরো গভীরে টানে
তাই একাকী আত্মনির্ভরে বড় হই।
পত্রগুলো ধুলোরঙ মেখে বাদামী ধূসরে ঝরে
বসন্ত এলেই পাঁজরে রক্ত ফুল ফোটে
ইটের ভাটার পোড়ামাটির মতো রঙ হয় ফুলগুলো।আমার ধূসর বাঁকলে অনুলিখন করে
পূর্ব পুরুষেরা পুঁথিপত্র রেখে গেছে
বাতাস এলেই ফুলপত্র গুলো কবিতা শোনায়। মাঝে-মাঝে পাখির মতো ডানা ঝাপটাতে চাই;
প্রকৃতি দেখার ভীষণ ইচ্ছে হয়
না অনেক চেষ্টা করেও উড়তে পারিনা।
আমার যে পালক নেই আমার ডানা ভাঙা ডালে
রঙদার পোকামাকড় ঘর বাঁধে সংসার পাতে;
আমার যে ঘর নেই সংসার নেই।
আমি বড়োই একাকী-
অরণ্যের তাবৎ বৃক্ষরা আমার চেয়ে সুখী
ওসব বৃক্ষরা সংঘবদ্ধে বৃদ্ধি করে নৈসর্গিক রূপ।
কেউ আমার ঠিকানা জানেনা…
শুধু ক্লান্ত পথচারী এসে ছায়াতলে ঘুমায়
কাঠঠোকরা আমার বুকের খোঁড়লে
ছানাদের তাপ প্রসারিত করে পালকের ওমে;
যুগল ছানারা বড়ো হতে-হতে
চঞ্চুতে চঞ্চু রেখে কুরকুর শব্দে আধার খুঁটে খায়। ধীরে-ধীরে উড়াল দিতে শিখে বহুদূরে উড়েও যায় আবার দিনশেষে ফিরে আসে
আমি দেখি চোখ ভরে।
আমারও মন চায়
ওদের মতো প্রকৃতি দেখে ঘরে ফিরি
না আমি তা পারিনা ;
আমি যে বৃক্ষ তাই জন্ম জন্মান্তরে
একপায়ে দাঁড়িয়ে বিমূর্ত নিসর্গের অলিন্দে
মূর্তমান সৌন্দর্য অবলোকন করে যাই.