1. admin@mannanpresstv.com : admin :
লেখক : জুবেল আহমদ এর গল্প // যৌ'নতা জীবনের সবকিছু না - মান্নান প্রেস টিভি
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:২৫ অপরাহ্ন

লেখক : জুবেল আহমদ এর গল্প // যৌ’নতা জীবনের সবকিছু না

এম.এ.মান্নান.মান্না
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩
  • ৯২ Time View
আজ আমি আমার স্বামী রাশেদকে কাজের মেয়েটার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার সময় দেখে ফেলেছি৷ শেষ রাতে কেন জানি ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিলো, দেখি পাশে রাশেদ নেই৷ ডাইনিং রুমে যেয়ে পানি খেলাম, কাজের মেয়েটা ডাইনিং আর রান্না ঘরের মাঝে ছোট একটা স্টোর রুমে থাকে৷ ওই রুমে লাইট জ্বালানো দেখে কৌতূহলবশত উঁকি মেরেছিলাম; দেখি রাশেদ মেয়েটার উপর চেপে বসে আছে৷ বেচারা এতোই ব্যাস্ত ছিল যে আমার ডাইনিং রুমে লাইট জ্বালানো, পানি ঢালা কিছুরই শব্দ পায়নি৷ ওকে কিছু বুঝতে না দিয়ে চুপচাপ বিছানায় এসে শুয়েছি৷ কাজ শেষ করে রাশেদ ও এসে শুয়েছে বিছানায়৷ ফজরের আজানের সময় আর থাকতে না পেরে উঠে দ্রুত ওয়াশ রুমে গেলাম৷ হর হর করে বমি করে বেসিন ভর্তি করলাম৷ তারপর চোখে মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে পরোটার জন্য ময়দা ছেনতে বসলাম আমি৷ সকালে ঘুম থেকে উঠে রাশেদ চা-নাস্তা খেয়ে সুন্দর ভাবে বের হয়ে গেল৷৷
আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না৷ এই পরিস্থিতিতে অন্য কোনো মেয়ে হলে কি করতো আমি জানি না৷ হয়তো সবকিছু ছেড়ে ছুড়ে চলে যেত৷ কিন্তু আমি কার কাছে যাবো৷ আমার তো কেউ নেই তেমন, মা কে হারিয়েছি জন্মের পর পরই, আর বাবা কে পাঁচ বছর বয়সে ৷ মামার বাড়িতে বড় হয়েছি আমি, তারাতো আমাকে বিয়ে দিয়ে আপদ বিদায় করেছে৷৷
রাশেদরা অনেক বড়লোক, দুই ভাই ওরা, বনানীতে ওদের নিজেদের ফ্ল্যাট, ইমপোর্ট-এক্সপোর্টের ফ্যামিলি বিজনেস ওদের৷ আমার শশুর শাশুড়ি দুইজনেই ইউকে থাকেন, রাশেদের বড় ভাই ভাবি সহ ৷ ওনারা সবাই ওখানেই সেটলড, রেস্টুরেন্টের বড় ব্যবসা ওইখানে৷ বাংলাদেশের ব্যাবসাটা রাশেদই দেখে৷ আমার শ্বশুর শাশুড়ি অনেক কম আসেন দেশে, শেষ বার এসেছিলেন আমার আর রাশেদের বিয়ের সময়, বছর দুই আগে, আর রাশেদের ভাই ভাবি তো আসেনই না বলতে গেলে৷ ওনাদের সামনাসামনি দেখি নাই কোনো দিন, ভিডিও কল এ কথা বলেছি শুধু৷
আমি রাশেদের দ্বিতীয় স্ত্রী, প্রথম স্ত্রী বিয়ের তিন মাসের মাথায় চলে যায়৷ আমার শ্বশুর শাশুড়ি আমাকে নিজেরা পছন্দ করে বৌ বানান৷ বিয়ের সময় বুঝিনি, আমার মতো সাধারণ অনাথ কম লেখাপড়া জানা একটা মেয়েকে বাড়ির বৌ বানাতে এতো আগ্রহ কেন তাদের? এখন বুঝি, যাতে আমি তাদের লম্পট ছেলের সব কুকীর্তি মুখ বুঁজে সহ্য করি, ছেলের প্রথম বৌয়ের মতো সংসারের মুখে লাথি মেরে চলে যেতে না পারি, সেইজন্য আমাকে বৌ বানানো৷
রাশেদের চরিত্র যে খারাপ সেটা বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই বুঝতে পারি৷ রাশেদ মাঝে মাঝে ঢাকার বাইরে যেত, ব্যাবসার কাজ বলে৷ অচেনা নম্বর থেকে আমার কাছে ফোন আসতো, রাশেদ নাকি ওর সুন্দরী পিএ কে নিয়ে রিসোর্টে গেছে, রাশেদের কোনো শত্রু হয়তো আমাকে জানিয়ে দিতো রাশেদ বাসায় আসলে ওকে জিজ্ঞেস করলে অস্বীকার করতো, চেঁচামেচি করতো অনেক৷ বলতো আমি ছোট ফ্যামিলির, মনটাও ছোট, তাই সন্দেহ করি৷ রাশেদের প্যান্ট কাঁচতে যেয়ে, রিসোর্টের মেমো পেয়েছি এক বার৷ কিন্তু সবই মুখ বুঁজে সহ্য করেছি, আমার যে কিছুই করার নাই৷৷
বিয়ের পর কিছুদিন রাশেদ আমাকে অনেক আদর করতো, অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বাসায় আসতো৷ বেড়াতে নিয়ে যেত মাঝে মাঝে, আসলে নতুন একটা মেয়ের শরীর আবিষ্কারের নেশা কাজ করছিলো তখন৷ নেশা টা কেটে যেতেই সব শেষ, আবার অন্য মেয়ের শরীর খোজার পালা৷ লাভের মধ্যে রাফিয়া চলে আসলো আমার পেটে৷ দুই বছরের সংসার আমার, মেয়ের বয়স এক৷
এতদিনতো তাও কিছু চোখে দেখিনি, কিন্তু কালকের ঘটনাটা সবসময় চোখের উপর ভাসছে৷ গা গুলিয়ে যাচ্ছে শুধু, বমি উঠে আসছে পেট থেকে৷ এতোটা নিচে নামতে পারে রাশেদ, কেন জানি বিশ্বাস হচ্ছে না৷
দুপুরে ভাত খাবার পরে রাফিয়া ঘুমিয়ে গেলে শুয়ে শুয়ে চিন্তা করছিলাম, কি করতে পারি আমি?
 মামা-মামী কে সব কিছু জানানো৷ কিন্তু কোন লাভ নেই, এর আগেও বলেছিলাম, ওদের উত্তর হলো পুরুষ মানুষের একটু-আধটু দোষ থাকেই, মানিয়ে নিতে হয়৷
 শ্বশুর-শাশুড়িকে জানানো…কি হবে জানিয়ে, একই কথা বলবে৷ বিয়ের পরপর সব বলতাম, ওদের উত্তর এডজাস্ট করে নাও৷
 পুলিশ এর কাছে যাওয়া৷ কি লাভ, রাশেদ টাকা দিয়ে সব ম্যানেজ করে নিবে৷৷
রাশেদকে ডিভোর্স করে চলে যাওয়া৷ কিন্তু কোথায় যাবো আমি? লেখাপড়াও তো অতোটা জানি না, যে ভালো কোনো চাকরি যোগাড় করে নিবো৷৷
 নিজেও রাশেদের মতো পরকীয়া শুরু করে দেয়া৷ তাতে কি লাভ, মনে শান্তি আসবে না৷ মন কিছুতেই সায় দিবে না, রাশেদ নোংরা কাজ করছে৷ আমি কেন নোংরা হবো?
রাশেদ কে মেরে ফেলা৷ এটাও কোন সমাধান না, রাশেদ মরলো…কিন্তু আমি কি পাবো? সারাজীবন জেলে পচে মরতে হবে, মাঝখানে রাফিয়ার জীবনটাও নষ্ট হবে৷৷
 নিজে গলায় দড়ি নেয়া৷ কি লাভ? রাশেদ আরেকটা মেয়েকে নিয়ে আসবে বিয়ে করে৷ তার জীবনটা নষ্ট করবে৷৷
এমন কোনো উপায় কি নাই, যাতে সাপ ও মরবে আর লাঠিও ভাঙবে না৷ আসলে আমার তো কেউ নাই পরামর্শ করার মতো, আশ্রয় দেয়ার মতো৷৷
আমার জীবনের গল্পটা সুন্দর করে গুছিয়ে লিখে একটা সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপে পোস্ট করে দিলাম অনেকে অনেক রকম পরার্মশ দিলো, কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ, কোনটা হাস্যকর৷ কেউ কেউ আবার বললো, এক হাতে তালি বাজে না, তোমার ও দোষ আছে!
তবে একটা পরার্মশ আমার মনে ধরলো খুব৷ সেই অনুযায়ী অ্যাকশন ও নিলাম, ফল পেলাম হাতে নাতে ৷

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Categories

© All rights reserved © 2022 mannanpresstv.com
Theme Customized BY WooHostBD